শক্তি সঞ্চয় করে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’, বাংলার কোন কোন জেলায় চালাবে তাণ্ডব
আগামী ২৬-২৭ মে দীঘা বা ওড়িশা বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়বে "যশ" সাইক্লোন
করোনা সংকটের মাঝেই ঘূর্ণিঝড় আশঙ্কায় কাঁপছে দক্ষিণবঙ্গের জেলার বাসিন্দারা। ঠিক যেন গতবছরের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে বাংলায়। গতবছর এই সময় নাগাদ বাংলার বুকে আস্ফালন দেখিয়েছিল আম্ফান ঘূর্ণিঝড়। চলতি বছরে আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যশ ঘূর্ণিঝড়। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরের বুকে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হচ্ছে যা শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ২২ মে নাগাদ উত্তর আন্দামান সাগর এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে যা তার ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তারপর চলতি মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ ২৬ মে বা ২৭ মে দীঘা বা ওড়িশা বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়বে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তার জিকে দাস বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মঙ্গলবার বিকেলের দিকে রাজ্যের উপকূলীয় এলাকায় কিছুটা এগিয়ে আসতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কিছুটা এগিয়ে এলে মঙ্গলবার বিকেলে উপকূলবর্তী কিছু কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে। তারপর দিন ঘুরলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জোরালো হবে। তবে ঘূর্ণিঝড় এলে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এই বিষয়ে আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং বাংলার প্রাণকেন্দ্র কলকাতা শহরকে সতর্ক করেছে। এই সমস্ত জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি দমকা হাওয়া বইবে যার ফলে জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গতবছরের আমফানের ভয়াবহ স্মৃতির কথা মনে রেখেই চলতি বছরের ঘূর্ণিঝড়ের জন্য যথেষ্ট উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। আগে থাকতেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করার জন্য প্রশাসনকে তৎপর করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই একাধিক সতর্কতামূলক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য। বিপর্যয় মোকাবিলার সমস্ত দপ্তরের কর্মীদের বর্তমানে ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর অনুযায়ী এই ঘূর্ণিঝড় উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন না করলে উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে আসবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে দিক থেকে এবং ২৬-২৭ মে নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়বে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘা, শংকরপুর, মন্দারমনি, তাজপুর, জুনপুট ইত্যাদি উপকূলে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম শুনেই ঘুম উড়েছে সুন্দরবনবাসীদের। প্রশাসন বিশেষ করে সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ও সন্দেশখালি এলাকায় নজর রাখছে। এছাড়া ২৩ মে এর মধ্যে সমুদ্র থেকে সমস্ত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।