নিউজরাজ্য

Cyclone Yaas: ২৬ মে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানবে যশ, গতিবেগ ঘন্টায় ১৬৫ কিমি

Advertisement

গোটা দেশজুড়ে করোনা সংক্রমনের মাঝেই নতুন উদ্বেগের নাম যশ সাইক্লোন। বেশ কয়েকদিন আগে থাকতেই পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা রাজ্যকে এই ঘূর্ণিঝড়ের কথা জানানো হয়েছে। ঝড়টি বঙ্গোপসাগরের বুকে শক্তি সঞ্চয় করে ধেয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। এই বিষয়ে আগে থাকতেই সর্তকতা জারি করা হয়েছে। গতকাল ২২ তারিখে ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি একটি বৈঠক করে। সেই বৈঠকে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজিব গওবা গোটা বিষয় খতিয়ে দেখতে রাজ্য ও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এই শক্তিশালী ঝড়ের সাথে কি করে মোকাবিলা করা যাবে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। মনে করা হচ্ছে আগামী ২৬ তারিখ সন্ধ্যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যা উপকূলে এই ঘূর্ণিঝড় যশ আছড়ে পড়বে।

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের ওপরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এই নিম্নচাপ আজ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। তারপর সেটি উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ২৪ তারিখ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তারপর পরবর্তী ২৪ ঘন্টা এই ঘূর্ণিঝড় শক্তি সঞ্চয় করে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তারপর ২৬ মে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে ধীরে ধীরে সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ এবং উড়িষ্যা উপকূলের কাছে পৌঁছাবে। তারপর ঐদিন বিকেলের দিকে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর ওড়িশা এবং বাংলাদেশ উপকূলে তার সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। এই ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে প্রায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। ঝড়টি তার অভিমুখ সামান্য পরিবর্তন করলে দীঘা উপকূলের জায়গায় সুন্দরবন উপকূলে এসে পৌঁছাবে।

ইতিমধ্যেই ঝড়ের সাথে মোকাবেলা করার জন্য সব রকম প্রস্তুতি আগে থাকতে নিয়ে রাখা হচ্ছে। গতকালের বৈঠকে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝড়ের পর উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য ৬৫ আর্মি দল ও ২০ অন্যদলকে রাখা হয়েছে। এছাড়া ঝড়ের সময় মানুষ যাতে খাবার, জল ও প্রয়োজনীয় জিনিস মজুদ রাখে তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্যজুড়ে ঝড়ের ফলে যাতে কোথাও না অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আজ থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্র থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। সমুদ্রের যাতে কোনরকম নৌকা বা বোর্ড না থাকে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী নিচু এলাকার মানুষদের আগেভাগে উঁচু জায়গায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গতকালের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অন্ধপ্রদেশ এবং আন্দামান নিকোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা ছিলেন। এই ঝড়ের সময় টেলিকম ব্যবস্থা বা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সময়ের জন্য রেল বন্ধ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সতর্ক করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে। গতবছর এই সময় আম্ফান ঘূর্ণিঝড় তার আস্ফালন দেখিয়েছিল যা প্রবল ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। সেই ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১৮৫ থেকে ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। যশ ঘূর্ণিঝড় একটু কম হলেও প্রায়ই একই গতিবেগে আছড়ে পড়তে চলেছে। তাই আগে থাকতে ক্ষয়ক্ষতির কথা ভেবে উদ্বেগে রয়েছে রাজ্যবাসী।

Related Articles

Back to top button