ঘূর্ণিঝড় যশ অনেকদিন হলো কেটে গিয়েছে, কিন্তু এই যশ ঘূর্ণিঝড়ের পরে কেন্দ্র এবং রাজ্যের সংঘাত আরো চরমে উঠেছে। শুভেন্দু অধিকারী আমন্ত্রিত থাকার কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর রিভিউ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি। সেই নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে একাধিক টুইট করলেন বিজেপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তার সাথেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হলো একটি বড় পদক্ষেপ। ৩ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করার পরেও আচমকা রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলি করার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় কর্মীবর্গ কমিটি।
শুক্রবার রাত্রে একটি গেজেটেড নোটিশ ধরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আদেশ দেওয়া হয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিলিজ করা হয়। জানানো হয় তিনি এবার থেকে রাজ্য সরকারের না কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী হতে চলেছেন। এই ঘটনার পরেই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত চরমে উঠেছে। তৃণমূল নেতারা বারংবার কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতিকে কটাক্ষ করে তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। তবে এবারে শুধুমাত্র তৃণমূল নেতারা নন, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর বদলি আটকানোর জন্য সরাসরি মাঠে নেমে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার প্রেস কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতিহিংসামূলক বলে আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে তোপ দেগে তিনি বলেছেন, “আলাপন কি একজন বাঙালি আমলা বলেই এত রাগ?” এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি করজোড়ে অনুরোধ করেছেন যেন তিনি তার এই নির্দেশ প্রত্যাহার করেন এবং তাঁর এই নোংরা খেলা বন্ধ করেন।
‘মমতার বিরুদ্ধে রাগ মেটানোর জন্য কি মুখ্য সচিবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হলো?’ এই প্রশ্নের উত্তরও চেয়েছেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির কাছে। কিছুদিন আগে আলাপনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দাবি মেনেও নেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেই আচমকা একটি শর্ট নোটিশে কিভাবে একজনকে বদলি করে দেওয়া যায়? এই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত এবং নিয়োজিত এই আধিকারিক কিন্তু রাজ্যের আওতাধীন। রীতিমতো কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যসচিবের কি দোষ ছিল? উনি তো আমার সঙ্গে কাজ করছিলেন। মুখ্যসচিব একজন রাজ্য সরকারের আধিকারিক। হতে পারে তাকে কেন্দ্র নিয়োগ করেন কিন্তু ওরা রাজ্যের জন্য কাজ করে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে এরকম অদ্ভুত নোটিশ দিয়ে দেওয়ার মানেটা কি? আপনাদের কোন সৌজন্যবোধ নেই নাকি?”