আজ ঘোষণা হচ্ছে না মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের নির্ঘণ্ট, পরীক্ষা নিয়ে চরম ধোঁয়াশা
গতকাল রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিবিএসই দ্বাদশ এবং আইএসসি পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়ার ঘোষণার পরেই শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা
বেশ কয়েকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল কবে ঠিক মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি ঘোষণা হবে সেই নিয়ে। অবশেষে গতকাল পর্ষদ এবং সংসদ জানিয়ে দিয়েছিল আজ অর্থাত বুধবার সমস্ত সূচি ঘোষণা হচ্ছে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার। কিন্তু গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দিল সিবিএসই বোর্ডের দ্বাদশ এবং আইএসসি পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পরেই মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ব্যাকবেঞ্চার ছাত্রছাত্রীদের বিপ্লব আরো জোরালো হলো।
আজকে সাংবাদিক বৈঠক করে পরীক্ষার সূচি এবং নির্ঘন্ট ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু, এই সাংবাদিক বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে বলেই খবর। কিন্তু সংসদ সূত্রের খবর, আপাতত শুধুমাত্র স্থগিত রয়েছে এই সাংবাদিক বৈঠক। তারা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। আগেই সর্বভারতীয় বোর্ডের দুটি পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিয়েছেন পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা নেওয়া হবে না। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, বাংলায় মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বাংলার পরীক্ষার পরে কি প্রভাব ফেলবে নাকি না?
এবারে বাংলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে ১২ লক্ষের কাছাকাছি। অন্যদিকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৮ লাখ। প্রায় ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ বর্তমানে দোলাচলে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছেন পরিষদ এবং সংসদ কর্তারা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপরেই এবছরের পরীক্ষা নির্ভর করছে। যদি পরীক্ষা বাতিল করতে হয় তাহলে কিভাবে মার্কশিট তৈরি করা হবে সেই নিয়ে চিন্তায় রয়েছে পর্ষদ এবং সংসদ কর্তারা। এই ২০ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীর ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে এই দুটি পরীক্ষার উপরে। যদি পরীক্ষা না নেওয়া হয় এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি সঠিক না হয় তাহলে কিন্তু পরবর্তীকালে তাদের চাকরি পেতে সমস্যা হবে।
প্রাক্তন সংসদ কর্তা দেবাশীষ সরকার জানাচ্ছেন, “একটা প্রেস কনফারেন্স মিটিং করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বাদশ এবং দশমের পরীক্ষার কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। সেই মামলার রায়ের উপরে নির্ভর করবে পরীক্ষা হবে কি হবে না সেটা। আমাদের জুলাই মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে এই নোটিশের জন্য। সুপ্রিম কোর্টের রায় যেরকম বলবে সেরকম ভাবেই চলবে দেশের প্রত্যেকটি বোর্ডের পরীক্ষা ব্যবস্থা। এতে রাজ্য সরকারের আর কোনো হাত নেই। শেষমেষ সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে পরীক্ষাটা কিভাবে হবে। সকলের মধ্যেই একটা অস্থিরতা চলছে। সুপ্রিম কোর্টের উপরে আস্থা রেখে আমাদেরকে এগোতে হবে।”