চলতি মাসেই পোস্তা উড়ালপুল ভাঙ্গার কাজ শুরু করছে পৌরসভা
ব্রিজ বিশেষজ্ঞদের মতামত জানার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা
কিছুদিন আগেই পাঁচ বছর পূর্তি হলো অভিশপ্ত সেই পোস্তা উড়ালপুল ভাঙ্গার ঘটনার। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আগেই সকাল ১০ টা কি ১১ টা নাগাদ হঠাৎই ভেঙে পড়ে এই পোস্তা উড়ালপুল। ঘটনায় সেই জায়গাতেই মারা যান ২৮ জন সাধারণ মানুষ। সেই অভিশপ্ত দিনটির পর কেটে গিয়েছে গোটা পাঁচ পাঁচটা বছর। কিন্তু এখনও সেই একই বেহাল দশায় পড়ে আছে পোস্তা উড়ালপুল। অবশেষে এবারে সেই উড়লপুলের বেঁচে থাকা অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
বুধবার কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম পোস্তাবাজার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে এই উড়ালপুল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। জানা যাচ্ছে আগামী ১৫ জুন থেকে সর্ব মোট চারটি দফায় এই উড়ালপুল ভেঙে ফেলার কাজ হবে। প্রথম দফায় ৪৫ দিনে উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে ফেলা হবে। তারপর ধীরে ধীরে বাকি অংশ ভাঙ্গা হবে।
ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, অত্যন্ত জনবহুল এলাকা হওয়ার কারণে ট্রাফিক এবং মানুষের চাপ পোস্তা অঞ্চলে প্রচন্ড বেশি। তাই এই কিছুদিন যান চলাচল যাতে ব্যাহত না হয় সেই জন্য ট্রাফিক অন্যদিক দিয়ে ঘুরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কলকাতা পুরসভা। আপাতত প্রথম দফার উড়ালপুল ভাঙ্গার কাজের রূপরেখা তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে বাকি অংশটি ভাঙার পরিকল্পনা গ্রহণ করবে রাজ্য।
টালা ব্রিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে যিনি রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিলেন সেই ব্রিজ বিশেষজ্ঞ ভিকে রায়নাকে এই পোস্তা উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তার পরামর্শেই ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। যদিও বাম আমলে এই ব্রিজ যখন নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন থেকেই সেখানকার বাসিন্দারা এই ব্রীজ নির্মাণের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তবুও রাজনৈতিক চাপে পড়ে পোস্তার মত একটা ঘিঞ্জি এলাকায় একটা উড়ালপুল তৈরি করার কাজ শুরু করে কেএমডিএ। পরিনাম, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চের ঘটনা। তারপরে বহু জল গড়িয়েছে গঙ্গা দিয়ে। অনেকেই পোস্তা ব্রিজের এই অবস্থা দেখে সেখান থেকে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এই ব্রিজের ভগ্নাংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেও ভবিষ্যতে কি পোস্তা আর নিজের পুরনো জায়গায় ফিরে আসতে পারবে? এটাই এখন দেখার।