রাজ্যের বিরোধী দল নেতার পদ থেকে সরছেন শুভেন্দু? অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
দিল্লিতে রাতারাতি তলব পেয়ে তড়িঘড়ি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী।
রাতারাতি দিল্লিতে জরুরি তলব পেয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এই তলব পাওয়ার পর থেকেই জল্পনা উঠেছে, এবার কি তাহলে রাজ্যে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরতে চলেছেন শুভেন্দু? কেনই বা ডাকা হলোনা রাজ্যের অন্যান্য নেতাদের? বিজেপির অন্দরে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের পরিস্থিতি। শুভেন্দু অধিকারী ভোটের আগে থেকেই বাংলার বিজেপির অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এই বিষয়টি অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। তার পাশাপাশি এবারের নির্বাচনে বহু হেভিওয়েট নেতা বিজেপি দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ভোটে বিজেপির অবস্থা খুবই খারাপ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ২০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে একেবারেই ব্যর্থ বঙ্গ গেরুয়া শিবির।
ভোটের আগে থেকেই শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি দলের বাংলা শাখার অঘোষিত প্রধান হয়ে উঠেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাকে একই আসনে বসতে দেখা যাচ্ছে যে কোন সভায়। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বারংবার সরব হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পাশাপাশি রাজ্যপালের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন একই ইস্যু নিয়ে। কিন্তু, শুভেন্দু অধিকারীর এরকমভাবে ক্ষমতায় আসা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে গেরুয়া শিবির শুভেন্দু অধিকারীকে সামনে রাখছে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা বিজেপির পুরনো নেতারা এবং সংঘ পরিবারের সদস্যরা মেনে নিতে পারছেন না ভালোভাবে।
তার সাথে আশা অনুযায়ী ভোটের ফল ভালো না হওয়ার কারণে, শুভেন্দু অধিকারীকেও দোষারোপ করছেন অনেকে। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ত্রিপল চুরির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও নারদ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারী। তার পাশাপাশি কিছুদিন আগেই শুভেন্দুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহকর্মী রাখাল বেরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে টাকা তছরূপের মামলায়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এরকম ভাবমূর্তি দলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের কাছে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন অনেক বিজেপি নেতা। তার পাশাপাশি, শুভেন্দু অধিকারীর কোন কালিমালিপ্ত প্রতিচ্ছবি সামনে আসলে তা দলের জন্য অত্যন্ত খারাপ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
ঘরে বাইরে বিভিন্ন সমস্যায় জড়িয়ে আছেন শুভেন্দু অধিকারী। অনেকে মনে করছেন, ত্রিপল চুরি এবং চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে টাকা তছরুপের মামলায় কিছু খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সেরকম হয় তাহলে কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক জীবনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খুব একটা ভালো হবে না। তার সঙ্গে যে দপ্তরে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু নিজে। এছাড়াও বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে এই বৈঠক ডাকা হলেও অনেক অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এছাড়া শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে রাজ্য বিধানসভায় বিজেপি কিভাবে দায়িত্ব পালন করবে তা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। কিন্তু সেরকম যদি না হয়, তাহলে হয়ত শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দিতে চলেছে বিজেপি।