জনতা না বুঝলে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ হবে আরও ভয়াবহ, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ থেকে বাংলা সেরে উঠলেও এখনো তৃতীয় ঢেউয়ের প্রহর গুনছেন সকলে
করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ প্রায় আসন্ন। কিন্তু তার আগেই দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের মত একটা মারাত্মক ভাইরাসকে নিয়ে একটা অকুতোভয় অবস্থা। কেউ যেনো আর এই ভাইরাসকে ভয় পেতেই চাইছেন না। ভ্যাকসিন এখন দেশে মিলছে। আগে দুর্নীতি এবং কালোবাজারি হলেও এখন কেন্দ্রের তরফে ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু তা নিতেও অনেকেই নিমরাজি। অনেকে আবার এখন মাস্ক অবধি পরতে চাইছেন না। মানুষের এরকম করোনা ভাইরাসকে নিয়ে একটা আলাদা রকমের মনোভাব দেখেই অনেকের মতামত, করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আগের ঢেউয়ের মতই ভয়াবহ হতে পারে, যদি আমরা নিজেদের ভালো নিজেরা না বুঝি।
এখন হয়ত সাধারণ মানুষ করোনা ভাইরাসকে নিয়ে অনেকটা কম ভাবছেন। সকলেই মনে করছেন, এখন তো করোনা কেস ১,০০০ এর নিচে, অসুবিধা নেই। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, অনেকদিন পরে গতকাল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,০০০ এর নিচে ছিল (পড়ুন ৮৮৫টি )। কিন্তু এটা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের গ্রাফ নিচের দিকে নামছে বলে। এই সময় যদি আমরা তৃতীয় ঢেউকে নিজেরা আমন্ত্রণ জানাই, তাহলে ব্যাপারটা মানুষের সমাজের ক্ষেত্রে খুবই খারাপ হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন আমাদের আত্মসন্তুষ্টিতে নিজেদের পিঠ নিজেদের চাপড়ানোর সময় আসেনি। যখন করোনা পৃথিবী থেকে একেবারেই বিদায় নেবে, সেই সময় নাহয় এসমস্ত জেসচার করা যেতে পারে।
কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক বা সিসিএন এর তরফে এই সভা আয়োজন করা হয়েছিল। এতে উপস্থিত ছিলেন, দুজন ডাক্তার দিপ্তেন্দ্র সরকার এবং অভিজিৎ চৌধুরী। এছাড়া ছিলেন অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার এবং অভিনেতা কৌশিক সেন। তাদের সাথেই প্রাক্তন ক্রিকেটার উৎপল চট্টোপাধ্যায় এবং প্রবীণ ক্রীড়া সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই প্রথমে সাধারণ মানুষের ভুলগুলোকে তাদের চোখের সামনে নিয়ে আসেন ডাক্তার দীপ্তেন্দ্র। ডাক্তারবাবু বললেন, “করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যদি সংঘবদ্ধ ইমিউনিটি গড়ে তুলতে হয়, তাহলে আপনার কাছে টিকাকরণের থেকে বিকল্প কিছু নেই। আপনি যদি নিজে টিকা না গ্রহণ করেন, তাহলে আপনি শুধু একা না, আপনি নিজের পরিবার, এবং আপনার কাছের মানুষের ক্ষতি করছেন আরো বেশি করে।”
এছাড়াও তার বক্তব্য, “আমাদের মত দেশে, যেখানে জনসংখ্যা প্রায় একটা বিস্ফোরণ ঘটানোর মত জায়গায় এসে গেছে, সেরকম একটা দেশে কিন্তু করোনা বিধি মেনে চলা খুব একটা সুবিধার কাজ না। কিন্তু আমাদের মাস্ক ব্যবহার করা নিয়ে আরো বেশি সচেতন হতেই হবে। তার সাথে সাথেই করোনা ভাইরাসজয়ীদের মানসিক, শারীরিক এবং অর্থনৈতিক পুনর্বাসন প্রয়োজন।” তার সাথে সাথেই চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো গ্রামের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তারবাবু। গ্রামীণ স্বাস্থের ক্ষেত্রে কমিউনিটি পার্টিসিপেশন এর গুরুত্বের কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি। এছাড়াও বাকি বক্তাদের কথাতেও বারবার উঠে এলো করোনা ভাইরাস নিয়ে মানুষের বেপরোয়া মনোভাবের কথা। সকলের কথাতেই, মানুষ এই ভাইরাসটিকে নিয়ে বড্ড বেশি বেপরোয়া হয়ে গেছে। অভিনেতা কৌশিক সেন তাই জন্যই বললেন, “ভয় সবসময় খারাপ না। করোনাকে আটকাতে কিছুটা ভয় পাওয়ার দরকার কিন্তু আছে। নাহলে আমরা আবারো আমাদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবো।”