প্রথমে বিজেপির টিকিটে জয়ের পরে আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন মুকুল রায়। তারপর থেকেই মুকুল রায় রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে চলছে জল্পনা। একদিকে তিনি বিজেপি বিধায়ক। অন্যদিকে আবার তিনি তৃণমূল নেতা। এই একই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। মুকুল রায় যখন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ” মুকুল রায় বিজেপি পার্টির মেম্বার। অসুবিধার কি আছে?”
দিন কয়েক পরে সেই একই ব্যাখ্যা করেন তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রীর পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, মুকুল রায় পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে এই একই ব্যাখ্যা দিলেন পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বললেন, “মুকুল দা তো এখনো বিজেপির বিধায়ক। তাই স্পিকার একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সরকারের কোনো যোগাযোগ নেই।” রাজনৈতিক মহলের ধারণা সরাসরি শুভেন্দু অধিকারী কে খোঁচা দিতে এই কথা বলেছেন ফিরহাদ হাকিম।
অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ বললেন, “নিয়ম অনুযায়ী বিরোধীদের নাম থেকে পিএসি চেয়ারম্যানের পদ ঠিক করতে হয়। সেখানে নিজের ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্পিকার তাই বাকি কমিটির পদে থেকে আমাদের কোনো লাভ নেই।” তারপরেই ফিরহাদ হাকিম এর মন্তব্য, “নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করছেন কেন, মুকুল দা তো এখনো বিজেপির বিধায়ক। বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করুন। আমরাতো পিএসি চেয়ারম্যানের পদ বিরোধীদের দিয়েছি।এটাতো স্পিকার ঠিক করেন। রাজ্য সরকার নয়।” যদিও এই একই ইস্যু নিয়ে মঙ্গলবার রাজভবনে গিয়ে ধনকর সাহেবের সঙ্গে বৈঠক করার কথা শুভেন্দু অধিকারীর।
শুক্রবার বিধানসভায় পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মুকুল রায় কে মনোনীত করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সিদ্ধান্তের পরেই বিজেপি সেখান থেকে ওয়াকআউট করে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, বিধানসভার সদস্য পদ টিকিয়ে রাখতে পারবেন না মুকুল রায়। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, “মুকুল রায় এখনো বিজেপির বিধায়ক।” কিন্তু বিজেপি এখনও পর্যন্ত সেই ব্যাপারটি মানতে নিমরাজি। স্পিকারের এহেন সিদ্ধান্তের পর মুকুল রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জলঘোলা রাজ্য রাজনীতিতে। স্পিকারের অবস্থান যদিও নিজের দিকে একদম ঠিক, কারণ বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে অভিজ্ঞ এবং বরিষ্ঠ হলেন মুকুল রায়। তাই তাকেই বিধানসভার পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান করার কথা। কিন্তু স্পিকারের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক রঙ দেখছে বঙ্গ বিজেপি।