রাজ্য চাইলে শুক্রবার থেকে চলতে পারে লোকাল ট্রেন, ঘোষণা রেলের
পূর্ব রেলওয়ে তরফ থেকে সরাসরিভাবে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য
রাজ্যে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। লোকাল ট্রেন চালু করার দাবি নিয়ে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে বিক্ষোভ। কড়া বিধি নিষেধ সত্ত্বেও সোনারপুর থেকে শুরু করে শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার বেশকিছু স্টেশনে মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন লোকাল ট্রেন চালু করার দাবিতে। এই পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন আবার কবে চালু হবে সেই নিয়ে অনেকদিন ধরেই অপেক্ষা করছিলেন নিত্যযাত্রীরা। তারই মধ্যে আগামী ১৫ জুলাই বাংলায় বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাহলে কি, বিধি নিষেধ শেষ হলেই সরাসরি চালু হয়ে যাবে লোকাল ট্রেন পরিষেবা? যদিও এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত নবান্নের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
গতমাসে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ল শর্তসাপেক্ষে বাস পরিষেবা শুরু করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। এছাড়াও, সোমবার থেকে রাস্তায় বাস এর পরিমাণ অনেকটা বেড়ে গেছে। এরপরে নিত্যযাত্রীদের সমস্যা বেশ কিছুটা কমবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। তার সাথেই রাজ্য সরকারের করার নির্দেশ কোনভাবেই বাসের ভাড়া বাড়ানো যাবে না। যার ফলে উপকৃত হবে আখেরে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে কী রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আগামী শুক্রবার থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করা হবে? এই নিয়ে রেল বোর্ডের বক্তব্য, তাঁরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত ট্রেন চালানোর জন্য। রাজ্য সরকারযখন থেকে ট্রেন চালানোর কথা বলবে তখন থেকে তারা ট্রেন পরিষেবা চালু করতে পারে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সংযোগ আধিকারিক গীতা সরকার বলেছেন, “আমরা তৈরি রাজ্য সরকার বললে আমরা লোকাল ট্রেন চালিয়ে দেব। আমরা সম্পূর্ণ রুপে প্রস্তুত।” বাংলা লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে বারংবার পূর্ব রেলের তরফ থেকে রাজ্যকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। একাধিকবার রাজ্য এবং রেলের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়েছে এই নিয়ে। এই প্রসঙ্গে, পূর্ব রেলের মুখ্য সংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বললেন, “রাজ্যকে আজকে চিঠি পাঠিয়েছি। যা পরিস্থিতি রয়েছে তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কিন্তু রাজ্য সরকার অনুমতি না দিলে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করা সম্ভব নয়। আমরা রাজ্যের সবুজ সংকেতের জন্য মুখাপেক্ষী।”
যদিও লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু প্রসঙ্গে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “ট্রেন চালু নিয়ে কথা বলিনি। এখনও পর্যন্ত সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ” কিন্তু বাংলায় আস্তে আস্তে করোনাভাইরাস এর দাপট কমতে শুরু করেছে। বাংলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের নিচে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছেন লোকাল ট্রেন চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু, কয়েকদিনের জন্য করোনাভাইরাস এর পরিমাণ কিছুটা কম হলেও এখনই সম্পূর্ণরূপে সমস্যার শেষ হয়নি রাজ্যের জন্য। কারণ তৃতীয় ঢেউ আসন্ন এবং ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন গতকাল জানিয়ে দিয়েছে তৃতীয় ঢেউ আসছেই এবং আর কিছুদিনের মধ্যেই আসছে। এরকম পরিস্থিতিতে আবারো লোকাল ট্রেন চালালে ভিড়ের পরিমাণটা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। বাসে যতই হোক না কেন ট্রেনের মত ভিড় হবে না। এই রকম পরিস্থিতিতে সবাই তাকিয়ে রয়েছে রাজ্য সরকারের দিকে। সবাই অপেক্ষায় ১৫ই জুলাই এর।