Mamata Banerjee: ২১-এর বার্তা শুনবে আরও ৭ রাজ্যে, চাপে বিজেপি নেতৃত্ব
বিজেপির বিরুদ্ধে একটা মহাজোট তৈরি করে আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভালো জায়গা তৈরি করার পথে এগোচ্ছেন মমতা
বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিজয়রথ কে একেবারে আটকে দিয়ে এবারে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের জায়গা পাকা করতে চাইছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রধান লক্ষ্য আগামী লোকসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি কে ভালো ব্যবধানে পরাজিত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই লক্ষ্যে প্রধান কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে আগামী একুশে জুলাই থেকে।
প্রত্যেক বারের মতো এবারেও তৃণমূলের শহীদ দিবস পালিত হবে ২১শে জুলাই। তবে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থাকার কারণে গত বছরের মতো ভার্চুয়ালি এইবারেও এই কর্মসূচির আয়োজন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই কর্মসূচিতে ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য থাকার কথা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তার সাথে সাথেই জাতীয় রাজনীতিতে কিভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের প্রভাব বিস্তার করতে চলেছেন সেই আভাস কিছুটা পাওয়া যাবে একুশে জুলাই।
কিন্তু, এবারের একুশে জুলাই এর ভাষন আগের বারের মত একেবারেই নয়। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তৃণমূল কংগ্রেসের এটাই বোধহয় সর্বপ্রথম সবথেকে বড় কর্মসূচি। আর এই একুশে জুলাই এর ভাষণকে চির স্মরণীয় করে রাখতে এবারে এই ভাষণ টেলিকাস্ট করা বাংলার বাইরেও বেশকিছু রাজ্যে। আপাতত তৃণমূল সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, আপাতত বাংলা বাদে ভারতের সাতটি রাজ্যে তৃণমূল নেত্রীর ভাষণ টেলিকাস্ট করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছে দিল্লি, গুজরাট, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, ঝাড়খন্ড, অসম এবং ত্রিপুরা।
এরমধ্যে আপাতত গুজরাট, অসম এবং ত্রিপুরায় বিজেপি শাসিত সরকার রয়েছে। এই সমস্ত জায়গায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ টেলিকাস্ট করে বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জ দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই, জায়গায় জায়গায় জায়েন্ট স্ক্রিন লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। বর্তমানে লোকসভার বাদল অধিবেশন এর কারণে তৃণমূলের বহু নেতা-নেত্রী এখন দিল্লিতে রয়েছেন। তাদের কাছে দিদির ভাষণ পৌঁছে দেওয়ার জন্যই মূলত জায়েন্ট স্ক্রিনে ভাষণ টেলিকাস্ট করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখান থেকেই তারপর ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে এই ভাষণ টেলিকাস্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে।
অন্যদিকে তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তকে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না বিজেপি। বর্তমানে সারা ভারতে বিজেপি বিরোধী অন্যতম মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপরন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ভারতের অন্যান্য রাজ্যে নিজেদের সংগঠন শক্ত করার কাজ শুরু করে দিন। গুজরাটের ইতিমধ্যেই স্থানীয় গুজরাটি ভাষায় ছাপানো লিফলেট বিলি করা শুরু হয়েছে। সেই লিফলেটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং তার ভাষণের ব্যাপারে জানানো আছে। অন্যদিকে, দিন কয়েক আগে তৃণমূলের বিধানসভা নির্বাচনের অন্যতম প্রধান কারিগর প্রশান্ত কিশোর সরাসরি গিয়ে বৈঠক করে এসেছেন এনসিপি’র প্রধান শরদ পাওয়ার এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে।
পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় সংগঠন দৃঢ় করার জন্য কাজে লেগে পড়েছেন মুকুল রায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন নির্বাচনী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোর। অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন শক্ত করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী একটি মহাজোট তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্ভাবনা রয়েছে এই জোটের প্রধান মুখ হতে চলেছেন মমতা নিজেই। এই জোটে আবার যদি কবরে যুক্ত হয় তাহলে কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে এই মহাজোট একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবে। সেই লক্ষ্যেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি পর্ব শুরু করে দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।