ন্যানো প্রকল্প সরে যাওয়ার এক যুগ, ফের বাংলায় ফিরতে চাইছে টাটা, স্বাগত শিল্পমন্ত্রীর
সূত্রের খবর অনুযায়ী টাটা কোম্পানি আবারো বাংলায় বড় কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে
সিঙ্গুর আন্দোলনের পর কেটে গিয়েছে গোটা ১৩টা বছর। ন্যানোর কারখানা বাংলার সিঙ্গুর থেকে চলে গিয়েছে গুজরাটের সানন্দে। এই ১৩ বছরে গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। ২০০৮ সালে সিঙ্গুরে টাটার কারখানার বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলশ্রুতি সিঙ্গুর থেকে টাটার কারখানা এবং বাংলা থেকে বাম সরকার দুটোই সরে যায়। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বহু চেষ্টা করার পরেও সিঙ্গুরের ওই জমি তে চাষ করা সম্ভব হয়নি। তারপরে বহু বছরের একটা বিরাম।
কিন্তু, তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে যে টাকা রাজ্য ছেড়ে চলে গিয়েছিল তাদের বাংলায় ফিরিয়ে আনার জন্য আবার উদ্যোগী হয়েছে তৃনমূল কংগ্রেস সরকার। যে শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “লড়াই ছিল বাম সরকার এবং তাদের জমি অধিগ্রহণ নীতির বিরুদ্ধে কিন্তু টাটার বিরুদ্ধে নয়। যে পদ্ধতিতে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল সেই পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা ছিল। টাটা কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কোনো রকম শত্রুতা নেই। আমরা সেই কোম্পানির সঙ্গে লড়াই করিনি। টাটা দেশে এবং বিদেশে একটি অন্যতম বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী এবং অন্যতম সম্মানীয় শিল্পগোষ্ঠী। আমরা কোনভাবেই টাটা কোম্পানিকে দোষ দিতে পারিনা।”
চট্টোপাধ্যায় বলছেন, রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই আগ্রহ দেখিয়েছে টাটা ইন্ডাস্ট্রিজ। তিনি বলছেন, “টিসিএস এবং টাটা মেটালিকস এই রাজ্যে ব্যবসা করছে। কিন্তু এরপরে যদি কোনো বড় মাপের কোনো বিনিয়োগ নিয়ে তারা আসতে চায় তাহলে কোন অসুবিধা নেই। উৎপাদন বা অন্য যেকোন ক্ষেত্রে তারা বিনিয়োগ করতে পারে। সরকারের তরফ থেকে তাদেরকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। রাজ্য সরকারের তথ্য এবং প্রযুক্তি দপ্তরের সচিব আমাকে জানিয়েছেন টাটা গোষ্ঠীর আজ একটি টাটা সেন্টার তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।”
বিরোধীদলের পক্ষ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই কথা নিয়ে কটাক্ষ করা হলেও রাজ্য সরকার নিজের জায়গায় স্থির। গত ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে যেভাবে বামফ্রন্ট সরকারের তরফ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে টাটা কোম্পানি তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল সেই নির্দেশ সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে ওই জমি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরে কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ১৩ টা বছর। আবারো বাংলায় ফিরতে পারে টাটা। এরকম পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের দিকে একটাই প্রশ্ন, পুরনো জমি টাটাকে ফেরত দেওয়া হবে? নাকি নতুন জমি অধিগ্রহণ করবে রাজ্য সরকার?