নিউজরাজ্য

রাণু মন্ডলের জীবন কাহিনী! পুরোটা জানলে আপনার চোখে জল আসবে!

Advertisement

অরূপ মাহাত: বলিউডে গান গাওয়া যেকোনো শিল্পীর স্বপ্ন। তবে রেলওয়ে স্টেশনে গান গেয়ে জীবন চালানো কেউ যখন বলিউডে গাওয়ার সুযোগ পায় তখন তাকে ‘মিরাকল’ ছাড়া আর কিই বা বলবেন। এমনই এক ‘মিরাকল’ ঘটলো রাণাঘাটের রাণু মন্ডলের সাথে। অতীন্দ্র চক্রবর্তী নামে এক ভগবানের দূতের আগমনে বদলে গেল রাণু মন্ডলের জীবন। আবারও প্রমাণিত হলো প্রতিভা কখনও চিরকাল চাপা থাকে না। রাণাঘাটের স্টেশন থেকে বলিউডের সিনেমার জন্য গান গাওয়া -এমন স্বপ্নের উত্থান যার সেই রাণু মন্ডল আসলে কে?

রাণু মন্ডলের জন্ম ১৯৬০ সালের ৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের রাণাঘাট শহরের এক খ্রিষ্টান পরিবারে হয়। পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কারণে ছোটবেলা খুব কষ্টে কাটে তার। পড়াশোনার সুযোগ পায়নি তেমন। খুব কম বয়েসে বাবুল মন্ডল নামে জনৈক ব্যক্তির সাথে বিবাহ হলে তার গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যায়। স্বামী মুম্বাইয়ে বলিউড অভিনেতা ফিরোজ শাহের হয়ে কাজ করতেন। সেই সুবাদে রাণু মন্ডলও মুম্বাই পৌঁছায়। সেখানেই তারা এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সব কিছু যখন ঠিকঠাক চলছিল তখনই ঘটলো অঘটন। আচমকা রাণুর স্বামী মারা গেলেন। সেই সময় রাণুর কাছে না ছিল থাকার জায়গা, না ছিল কোন কাজ। তাই বাধ্য হয়ে নিজের এবং মেয়ের পেট চালানোর জন্য সে বাংলায় ফিরে আসে এবং সেখানে রাণাঘাট স্টেশনে গান গেয়ে নিজেদের দিন গুজরান করে। স্টেশনে গান শুনে কেউ তাকে খাবার, কেউ বিস্কুট বা কেউ কেউ টাকাও দিতেন। এভাবেই তাদের দিন চলছিল। একদিন অতীন্দ্র চক্রবর্তী নামে একজন তার গান শুনে তা স্যোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে। এরপরই বদলে যায় রাণু মন্ডলের জীবন। লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া ‘এক প্যায়ার কা নাগমা’ গানটি গেয়ে রাণু মন্ডল পৌঁছে যায় বিশ্ব দরবারে।

স্যোশাল মিডিয়া মারফত এই গানটি শোনেন বলিউডের বিখ্যাত গায়ক ও সুরকার হিমেশ রেশমিয়া। রাণু মন্ডলের কন্ঠে মুগ্ধ হয়ে তিনি তাকে ডেকে পাঠান একটি বেসরকারি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো ‘সুপারস্টার সিঙ্গারস’-এ। সেখানে বিচারক হিসেবে রয়েছেন হিমেশ। সেই মঞ্চে তিনি রাণু মন্ডলকে অনুরোধ করেন তাঁর আগামী সিনেমা ‘হ্যাপি হার্ডি এন্ড হীর’-এ একটি গান গাওয়ার। যা ছিল রাণুর কাছে স্বপ্নের মতো। এরপরই হিমেশ রেশমিয়ার সুরে ‘তেরি মেরি কাহানী’ গানটিতে গলা মেলায় রাণু। এরপরই বদলে যায় রাণু মন্ডলের জীবন। কলকাতার বিভিন্ন পূজো কমিটির থেকে ডাক আসে গান গাওয়ার। রাণু মন্ডলের জীবনে এই পট পরিবর্তনের কৃতিত্ব অবশ্যই অতীন্দ্র চক্রবর্তী ও স্যোশাল মিডিয়ার। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে প্রতিভা ও ভাগ্যের মেলবন্ধন জীবন বদলে দেয় যে কোন মুহূর্তে।

Related Articles

Back to top button