জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরে একটি নতুন রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল যেতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে নাকি আইনের শাসন না শাসকের আইন চলছে। এবারে সেই রিপোর্টটি চ্যালেঞ্জ করে কোর্টে নজিরবিহীন হলফনামা জমা করল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যে প্রতিনিধিদল ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরে এই রিপোর্ট দায়ের করেছে তাদের মধ্যে অনেকেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই কারণে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।
রাজ্যের তরফে সোমবার এডভোকেট জেনারেল এই হলফনামা পেশ করেন। তাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দায়ের করার জন্য বেছে বেছে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার ঘনিষ্ঠ সদস্যদের এই কাজের ভার দেওয়া হয়েছিল। এই কারণে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে পক্ষপাতী এবং রিপোর্ট এর কোনো সত্যতা নেই। বিজেপির সঙ্গে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি যোগসাজশ আছে বলেও দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের ফলে একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বহু বিজেপি কর্মী মারা গিয়েছেন। বহু বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া হয়েছেন। তবে শুধুমাত্র বিজেপি নয়, তৃণমূল এবং বামফ্রন্টের কর্মীরাও কিন্তু মারা গিয়েছিলেন। বিজেপি কর্মীদের পরিবারের তরফে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে প্রতিটি অশান্তির ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাই নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা হোক। কিন্তু রাজ্যের সেই দাবি সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দেন পাঁচ বিচারপতির একটি বৃহত্তর বেঞ্চ।
ওই বেঞ্চে মামলা খারিজ হয়ে যাবার পরেই রাজ্যের বক্তব্য হলফনামা আকারে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের তরফ থেকে। সেই হলফনামা পেশ করা হয়েছে সোমবার। এই হলফনামায় সরাসরি মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এনেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, একটি নিরপেক্ষ সংস্থা মানবাধিকার কমিশনের তরফে জারি করা রিপোর্ট সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নিয়োগ করা হয়েছিল বলেও তৃণমূলের অভিযোগ।