এবারে সরাসরি শারীরিক নিগ্রহের শিকার একজন মুসলিম ব্যক্তি। আর সেই কারণ হলো ধর্ম। উত্তরপ্রদেশে সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে বছর 45 এর একজন ব্যক্তিকে রাস্তার দিকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে হিন্দুরা। তাদের দাবী হল এই মুসলিম ব্যক্তিকে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে হবে। নতুবা তাকে হত্যা করার পর্যন্ত হুমকি দিচ্ছে তারা। যোগী আদিত্যনাথ এর রাজ্য উত্তর প্রদেশের কানপুরের ঘটনা রীতিমতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা আজকে কোন জায়গায়।
যদিও পরবর্তীতে ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের রেকর্ড করা একটি ভিডিওতে এই বিষয়টি প্রথমবার সামনে আসে। দেখা যাচ্ছে বাবার প্রাণ রক্ষার জন্য তাকে জড়িয়ে ধরেছে তার খুদে কন্যা। তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আক্রমণকারীদের কাছে মিনতি করছে ওই খুদে কন্যাটি। এমনকি পুলিশ হেফাজতেও তাকে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা ঘটিয়েছে দক্ষিণপন্থী বজরং দল।
বিজেপি এবং আরএসএস পন্থী বজরং দলের একটি সভাস্থল থেকে মাত্র 500 মিটার দূরে এই ঘটনাটি ঘটে। তাদের অভিযোগ ছিল, সেখানে মুসলিমরা একটি হিন্দু মেয়েকে ধর্ম পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। যদিও এই বিষয়টির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কিন্তু তারপরেই এই সমস্ত আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। যদিও ঘটনার সঙ্গে বজরং দলের সরাসরি যোগাযোগের কথা কেউ প্রকাশ্যে আনছে না।
কানপুর পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে ব্যান্ডপার্টি জোগান দেওয়া একজন ব্যক্তি, তার ছেলে এবং জনাদশেক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঙ্গা করার অভিযোগ উঠেছে। জানা যাচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তি বেলা তিনটে নাগাদ রিকশা চালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ঘিরে ধরে আক্রমণ করা হয়। তাকে জোর জবরদস্তি জয় শ্রীরাম ধ্বনি উচ্চারণ করতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি আক্রমণকারীরা তাকে এবং তার পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও তার অভিযোগ। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। ওই ব্যক্তি স্থানীয় একটি মুসলিম পরিবারের আত্মীয় যাদের সঙ্গে হিন্দু প্রতিবেশীদের মামলা চলছে। মনে করা হচ্ছে এই কারণেই প্রতিহিংসাবশত এই হামলা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই এই সমস্যার সাথে যুক্ত হয়েছে বজরং দল। সূত্রের খবর, মুসলিম পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ এনেছে তারা। কানপুর পুলিশের দাবি, এই ভিডিও তাদের নজরে এসেছে ইতিমধ্যেই। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাহুল আমান এবং রাজেশ নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু, এত বিতর্কের পরেও এই গ্রেফতারের প্রতিবাদে বজরং দল থানার সামনে এসে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।