অনেকে পড়াশোনা শেষ করে সরকারি চাকরির জন্য ভাবছেন হয়তো। অনেকে শিক্ষক হবেন হয়তো ভাবছেন। এই রাজ্যে হবু শিক্ষকদের জন্য সুখবর! আগামি ২ মাসে ১৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হবে রাজ্যে। এমনটাই জানালেন খোদ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আইনি জট কাটিয়ে ফের এসএসসি-তে নিয়োগ। মঙ্গলবার সকালে বিধানসভাতেই এই মন্তব্য করেছেন তিনি৷ শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মেনেই চাকরিপ্রার্থীদের সকল অভিযোগের নিষ্পত্তি করার চেষ্টা চলছে৷
এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য শিক্ষক নিয়োগে বদ্ধপরিকর। আমরা ইতিমধ্যেই প্রাথমিকে ৩৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছি। তবে শিক্ষক নিয়োগে অনেক মামলা হয়েছে। আইনি জট কাটিয়ে নিয়োগের চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী ২ মাসে ১৫ হাজার এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ হবে রাজ্যে।’ তিনি আরও জানান, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে অনেকাংশে মতভেদ আছে। এই নিয়ে কেন্দ্রের একতরফা তরফা ফতোয়া মানবে না রাজ্য।’
২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। এই নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেইসব অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে আইনি প্যাচে এই নিয়োগ পক্রিয়া আটকে ছিল। তবে গত জুলাই মাসে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের উপর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ তুলে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। ব্রাত্য বসু এদিন জানান, আদালতে এই মামলা চলার জেরে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে থমকে রয়েছে৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগের মামলার শুনানি চালাচ্ছে কমিশন।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে একটি বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে৷ কমিশনের তরফ থেকে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ শোনার পাশাপাশি আইনজীবীদের সঙ্গেও একটি নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ পাশাপাশি, এদিনও বিরোধীদের রোষের মুখে পড়তে হয় শিক্ষামন্ত্রীকে। তিনি তখন বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁরা কাজ করছেন। এসএসসি কমিশনের ৬ জন অফিসার রোজ বসে প্রার্থীদের অভিযোগ শুনছেন। ইতিমধ্যে অভিযোগের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। আদালত তাঁদের তিন মাস সময় দিয়েছে। ইতিমধ্যে সেই অভিযোগের তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হবে। আদালত তাঁদের সময়সীমা বর্ধিত করেছে। তারা আশা করছেন আদালতের নির্দেশেই তাঁরা দ্রুত নিয়োগ করতে পারবেন। বিভিন্ন আইনি জটিলতায় কাজ আটকে রয়েছে।”
স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, এখনও প্রায় পাঁচ হাজার চাকরিপ্রার্থীক অভিযোগের নিষ্পত্তি করার প্রক্রিয়া এখনো বাকি রয়েছে৷ এই মুহূর্তে যেভাবে এই অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে শুনানি চলছে, তাতে ডিসেম্বরের মধ্যেই সব অভিযোগের নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। এখনো পর্যন্ত কমিশনের কাছে এই মামলার প্রায় ১৮ হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।