অঞ্জন দত্তের গলায় ‘চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো?’ শুনেছি। তবে এবার এই গানটা একেবারে যর্থাথ জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সংগীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচীর ক্ষেত্রে। রূপঙ্কর বাগচী তবে একথা বেলা ওরফে স্ত্রী চৈতালী লাহিড়ির জন্য এই চাকরি পাননি নিজের জন্য করছেন। জীবনের ৪৮ টা বসন্ত পেরোনোর জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত গায়ক ৭৪০০ টাকার চাকরি পেলেন। টাকার অঙ্ক যাই হোল নতুন চাকর পেয়ে দারুন খুশি রূপঙ্কর।
আর হবে নাই কেন সময়ের ওপর ভরসা রেখে আজ তিনি এই চাকরি পেলেন। কি চাকরি পেলেন জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত গায়ক? অল ইন্ডিয়া রেডিওতে (AIR) ‘আধুনিক গান’ ক্যাটাগরিতে গান গাওয়ার চাকরি পেয়েছেন। রীতিমতো পরীক্ষা দিয়ে তিনি এই চাকরি পেয়েছেন তিনি। গত মার্চ মাসে অল ইন্ডিয়া রেডিওয় আধুনিক গানের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন রূপঙ্কর, সেই পরিক্ষার ফলাফল বেরোলো গতকাল। এ’ গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন এই সংগীত শিল্পী। সেই রেজাল্টের ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে রূপঙ্কর লিখেছেন, ‘কোনোদিনও অল ইন্ডিয়া রেডিওয় অডিশন দিই নি আগে, গতবছর লকডাউনে এক ওলোটপালোট অবস্থায় দিয়ে ফেলেছিলাম, আজ রেজাল্ট বেরোলো, দিব্য লাগছে।’ এরপরেই অনুগামীরা প্রিয় গায়কের সাফল্যে ভালোবাসা জানিয়েছেন।
গত বছর লকডাউনে সাধারণ মানুষ থেকে শিল্পীরা প্রত্যেকেই নানান অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন, বিশেষ করে শিল্পী ও কলাকুশলীরা অত্যন্ত অবসাদে ভুগেছেন। অনেকে শিল্পীসত্ত্বা ভুলে পেশা পরিবর্তন করেছেন। আবার কেউ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন, রূপঙ্কর বাগচী তাদের মধ্যেই একজন। তিনিও অন্যদের মতো করে শুরু করলেন।জীবনে অপরিকল্পিত যে অনেক কিছু ভালো হয়, তা এই সংগীত শিল্পীর পোস্টেই ধরা পড়েছে।
গানের গলা, সুর, তাল, লয়ের জন্য একসময় বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে কাজ করেছেন সংগীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী। জাতিস্বর-এ নিজের গান দিয়ে জাতীয় স্তরে সেরা পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন তিনি। বর্তমান জেনারেশনের কাছে নস্ট্যালজিয়া হল তাঁর গান। যে কোনও শিল্পীর কাছে তাঁর গানের পরিবেশনা সবার আগে। আরও ভালো কিছু করার ক্ষিদে মেটাতেই এবং নিজেকে অন্যরকম ভাবে প্রমাণ করতে এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। আর সফল ও হয়েছেন। আর তিনি প্রমাণ করলেন ইচ্ছাশক্তি থাকলে ঠিক সফল হওয়া যায়।