বিদ্যাসাগরের ভিটেমাটিতে বিধবা বিবাহ। নিজের একমাত্র বিধবা পুত্রবধূকে পুনরায় পাত্রস্থ করলেন হলদিয়া সুতাহাটা অনন্তপুর এলাকার বাসিন্দা নকুল ঘাঁটি এবং নন্দিতা ঘাঁটি। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ২৩ বছরের বিধবা ওই পুত্রবধূকে পুনরায় বিয়ে দেবার ঘটনা রীতিমতো সাধুবাদযোগ্য।
বছর কয়েক আগে একমাত্র ছেলে অর্ণব এর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে পুত্রবধূ শুভ্রাকে ঘরে এনেছিলেন নকল এবং নন্দিতা। তাকে বরাবর নিজের মেয়ের মত ভালবেসে এসেছেন তারা। কিন্তু, ২০২০ সালে মহিষাদল এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় ছেলে অর্ণব এর মৃত্যু হওয়ার পরেই যেন পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। সেই সময় শুভ্রার কোলে দেড় বছরের মৈনাক। অনেকেরই অর্ণব এর মৃত্যুর পর শুভ্রাকে শশুর বাড়ি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তবুও নিজের পিতা-মাতাসম শ্বশুর-শাশুড়িকে ছেড়ে যেতে চাননি শুভ্রা।
বরং তাদের মেয়ে হয়েই তাদের বাড়িতে ছিলেন তিনি। কিন্তু মাত্র ২৩ বছর বয়স তার। এই বয়সে মেয়ে একা থাকবে কিকরে! তাই তাকে আবারো পাত্রস্থ করার তোড়জোড় শুরু করে দেন ওই দম্পতি। খোজা শুরু হয় পাত্র। সেই মত একজনকে পাওয়াও যায়।
হলদিয়ার রামগোপাল চকের বাসিন্দা ২৬ বছরের মধু সাতরা বিবাহে রাজি হন। তিনি শুভ্রার ছেলেকেও নিজের ছেলে হিসাবেই মেনে নেন। গাড়ির শোরুমে কাজ করেন মধু। ধুমধাম করেই তার সাথে বিয়ে হলো শুভ্রার। নবদম্পতিকে সোনার হার দিয়ে বরণ করে নিলেন শুভ্রার শাশুড়ি নন্দিতা ঘাঁটি। করোনা বিধি মেনেই এই অনুষ্ঠান করা হলো। সমাজের তোয়াক্কা না করে এই বিয়ে দেওয়ায় খুশি সকলই। নকুল এবং নন্দিতা ঘাঁটি যেভাবে নিজের বৌমাকে মেয়ের মত করে ভালোবাসেন তাতে ধন্য ধন্য করছে গোটা এলাকা।