সুর সম্রাজ্ঞীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। তাঁর কোকিল কন্ঠের মিষ্টি সুর আর কখনো শোনা যাবে না, এটা মেনে নিতে পারছে না সংগীত মহল। ‘সুরের সরস্বতী’ ৯২ বছর বয়সে আজ সকালে করোনা পরবর্তী অসুস্থতায় চিরঘুমের দেশে হারিয়ে গেলেন। এই প্রতিভাবান গায়িকার গানের জাদুতে বিভোর দেশ থেকে শুরু করে বিদেশের সকলেই। তাঁর জনপ্রিয়তার ব্যাপ্তি ভারত ভূখণ্ড ছাড়িয়ে দিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে। তাঁর অসামান্য সৃষ্টির পুরস্কারস্বরূপ ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তিনি ৬ দশকের বেশি সময় ধরে সংগীত জগতকে মাতিয়ে রেখেছেন।
একদিকে যেমন হিন্দি রোমান্টিক গানে গলা মিলিয়ে অনেকের প্রেম জীবনের শুভ সূচনা করেছেন তিনি, ঠিক অন্যদিকে তাঁর গান শুনে চোখের জলে ভেসেছেন অনেকেই। রোমান্টিক গানের সুরে যেমন ছিল প্রেমের জাদু তেমনই দেশাত্মবোধক গানে ছিল বুক ফাটা কষ্টের আত্মপ্রকাশ। তিনি কখনও সংসার জীবন না করে, নিজের পুরো জীবনকেই সংগীতে আত্মদান করে দিয়েছিলেন। তিনি প্রায় ২০ টি ভাষায় ৩০ হাজারের বেশি গান গেয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দিয়ে গেছেন সংগীত জগতে।
১৯২৯ সালের ২৪ শে সেপ্টেম্বর একটি অত্যন্ত মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। মাত্র ৫ বছর বয়সে বাবার সাথে থিয়েটারে অভিনয় করতেন সুর সম্রাজ্ঞী। তবে তিনি বিভিন্ন জায়গাতে অভিনয় করলেও, তাঁর স্বপ্ন ছিল বড় গায়িকা হওয়ার। তাঁর বাবা দিননাথ মঙ্গেশকর একজন দক্ষ থিয়েটার অভিনেতা এবং গায়ক ছিলেন। লতাজি তাঁর বাবার কাছেই গান শেখা শুরু করেন মাত্র ৫ বছর বয়সে।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরকে। তাঁর পাতলা কন্ঠের জন্য অনেকেই সংগীতশিল্পী হিসেবে তাকে কাজ দিতে অস্বীকার করেছিলেন। তবে সমস্ত বাধা পেরিয়ে নিজের মেধা এবং প্রতিভার জোরে গোটা বিশ্ববাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। বসন্ত জোগলকরের ছবি ‘সেবা মে’ তে গান গেয়ে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। এছাড়া ‘অংরেজি ছোড়া চালা গয়া’, ‘দিল মেরা তোদা’ গান গেয়ে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। এখন তো তাঁর জনপ্রিয়তার প্রসার গোটা বিশ্ব।