মাঝখানে কেটে গেছে দীর্ঘ ৭৫ বছর। অবশেষে কংগ্রেস সরকারের এক বিরাট ভুল সংশোধনের পথে হাঁটছে বর্তমানের মোদি সরকার। কংগ্রেস সরকারের এমন ভুল নিয়ে অনেকে প্রতিবাদী হলেও, দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে ভুল তথ্যই সকলের সামনে উপস্থাপিত হচ্ছে। তবে এবার মোদি সরকার, কংগ্রেস সরকারের ভুলকে সংশোধন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আসলে ভারতের ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিরোর কর্মকাণ্ড লুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর সেই আধা সত্য ইতিহাস পড়ে বড় হচ্ছিল ভারতমাতার সন্তানরা। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে লুকিয়ে রাখা ন্যাশনাল হিরোদের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে মোদি সরকার।
জানিয়ে রাখা ভাল, কিছুদিন আগেই রাজ্যসভায় শিবসেনা সাংসদ অনিল দেসাই, এনসিআরটি সামাজিক বিজ্ঞানের বই নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করেন। তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ করেন যাতে স্কুলের বইয়ে লিপিবদ্ধ ভুল ইতিহাস সংশোধন করে সরকার। এছাড়াও তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন যে ইতিহাস সংশোধনের কাজ কি আদৌ হবে? তার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার জবাব দেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী। তিনি জানিয়েছেন, “এনসিআরটি সমাজ বিজ্ঞানের কিছু বই সংশোধন করে পুনর্মুদ্রণ এর জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায়, ২০২২-২৩ শিক্ষাগত ক্যালেন্ডারে নতুন সংশোধিত ইতিহাস বই পড়ানো হবে”।
আপনাদের জানিয়ে রাখি, এতদিন অব্দি কংগ্রেস জামানার ইতিহাস বইগুলিতে মুঘলদের মহান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল এবং ভারতের ঐতিহাসিক তথ্যগুলিকে ভুল উপস্থাপন করা হয়েছিল। অনেকেই বলেন, ইতিহাসের বইগুলিতে কে লালকেল্লা বা কুতুবমিনার বা তাজমহল তৈরি করেছিল তা স্পষ্টভাবে বলা আছে। কিন্তু এই সত্যটি ইচ্ছা করেই গোপন করা হয়েছিল যে কুতুবউদ্দিন আইবক কুতুব মিনার নির্মাণের জন্য মেহারলিতে ৪১ টি হিন্দু জৈন মন্দির ভেঙে দিয়েছিলেন এবং তারপরে মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের ওপর মিনার তৈরি হয়েছিল। এমনকি ওই বইতে সোমনাথ মন্দির, মথুরা এবং কাশির মন্দির কি করে ধ্বংস হয়েছিল সেই সম্বন্ধে কোন তথ্য দেওয়া হয়নি।
এছাড়া পুরনো ইতিহাসের বইতে প্রত্যেক চ্যাপ্টারেই আকবরকে মহান বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে সেই বইতেই জায়গা পাননি মহারানা প্রতাপ, যিনি নিজের রাজ্য বাঁচাতে নিজের জীবনের বাজি রেখে লড়াই করেছিলেন। এছাড়া মুঘলদের অত্যাচারের মুখে রুখে দাঁড়ানো গুরু তেগ বাহাদুর, গুরু গোবিন্দ সিং এবং তাদের চার সাহেবজাদার কাহিনী ইতিহাস থেকে সম্পূর্ণভাবে মুছে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস সরকারের এমন ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শেখানো নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠলে তারা কোনরকম যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেনি। অনেক শিক্ষাবিদ মনে করেন যে কংগ্রেস সরকার বামপন্থী এবং জিহাদী মতাদর্শের লোকেদের দিয়ে ইতিহাস লেখার কাজ করেছিলেন। তবে এবার ভারতের ইতিহাস যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সঠিকভাবে বুঝতে পারে তাই এনসিআরটি সমাজবিজ্ঞানের বইয়ে পরিবর্তন আনছে মোদি সরকার।