বাড়িতে জ্বলছে না উনুন, আবার আগের কষ্টের জীবনে ফিরে গেছেন লতাকণ্ঠী রানু মন্ডল
রানু মন্ডলের রানাঘাটের বাড়ির অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ
বর্তমান যুগে প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। আট থেকে আশি সকলেই এই সোশ্যাল মিডিয়া জগতে বিচরণ করে থাকেন। আর যারা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে পরিচিত, তাঁদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম হল রানু মন্ডল। বাংলায় এমন মানুষ খুব কমই হবেন যে রানাঘাটের রানু মন্ডলের নাম শোনেননি। আজ থেকে বছর দুয়েক আগে লতা কন্ঠে একটি গান গেয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন রানাঘাট রেল স্টেশনের ভিখারিনী রানু মন্ডল। সেখান থেকে বিদ্যুৎগতিতে উত্থান হয়ে স্বপ্ননগরী মুম্বাইতে অবধি পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। তবে এখনকার পরিস্থিতি অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
বলিউডের ছবিতে গান গাওয়ার পর অতিরিক্ত অহংকার এবং ফ্যানেদের সাথে দুর্ব্যবহার রানু মন্ডলকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসে রানাঘাটের সেই ভগ্নপ্রায় বাড়িতে। তবে অনেকেই মনে করেন করোনার প্রাদুর্ভাব না হলে হয়তো রানু মন্ডল এর অবস্থা এতটাও খারাপ হত না। তিনি মুম্বাইতে থাকতেন এবং গান গেয়ে দিন কাটাতেন। কিন্তু রিয়েল লাইফে তেমন কিছুই হল না। রানাঘাটে ফিরে এসে কোনরকমে দিন চালাচ্ছেন তিনি। তার বাড়ির অবস্থা বাইরে থেকে খুবই জরাজীর্ণ এবং ভিতর থেকেও খারাপ। বাড়ির দেওয়ালে শ্যাওলা জমে রয়েছে। যেকোনো দিন এমন বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে।
রানাঘাটের একতলার বাড়িতে মাত্র একটি রুম রয়েছে যাতে রানু মন্ডল থাকেন এবং জিনিসপত্র রাখেন। এছাড়া রুমের সামনের বারান্দায় তিনি খাবার রান্না করে। তবে খুব কম সময় তার বাড়িতে রান্না হয়। বেশিরভাগ দিন অন্যের দেওয়া খাবার খেয়ে বা নোনতা বিস্কুট খেয়ে দিন কাটিয়ে দেন লতাকণ্ঠি রানু মন্ডল। আসলে মাঝেমাঝেই রানুদির সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে পৌঁছে যান বেশকিছু ইউটিউবার। আর রানুদির বাড়ি যাবার অলিখিত নিয়ম হলো তার জন্য কিছু খাবার নিয়ে যেতে হবে। যাই হোক না কেন বর্তমানে তার অবস্থা দেখলে সত্যিই মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।
তবে যাই হোক না কেন দুই বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে লাইমলাইটে এলেও, এখনও তাঁর জনপ্রিয়তা ক্ষুন্ন হয়নি। রানু মন্ডল এর ভিডিও এখনও অব্দি সোশ্যাল মিডিয়াতে এলে তা চোখের পলকে ভাইরাল হয় যায়। যেকোনো ট্রেন্ডিং টপিকে রানু মন্ডল এর কোনো না কোনো ভিডিও ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। কিন্তু সেই সব ভিডিও থেকে অর্থ উপার্জন করে অন্যান্য ইউটিউবাররা যারা ওই ভিডিওটি পোস্ট করে। রানু মন্ডলের দৌলতে ভিডিও ভাইরাল হলেও তিনি এক পয়সাও পান না। তাই তো জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকলেও, দিনের শেষে সঙ্গী হিসাবে শুধু রয়ে যায় দৈনতা।