মে মাসের শেষটা একেবারেই ভালো হল না। গত দু’দিন ধরে অনুষ্ঠানের খাতিরে কলকাতাতে ছিলেন বলিউড খ্যাত গায়ক কেকে ( কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ )। ৩১’শে মে গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের সোশ্যালে পারফর্ম করতে নজরুল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন গায়ক। অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পরে অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফিরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সিএমআরআইতে প্রখ্যাত গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেশে। আবারো সঙ্গীত জগতের এক বড় নক্ষত্র পতন।
তবে এই গায়ক একটা সময় নিজের ছেলেবেলার ভালোবাসাকে পাওয়ার জন্য অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়েছেন। তিনি যখন তার স্ত্রী জ্যোতি লক্ষ্মী কৃষ্ণার সাথে জীবন কাটাবেন বলে মনে করেছিলেন তখন তিনি বেকার ছিলেন। আর খুব স্বাভাবিকভাবেই সেইসময় তার সাথে বিয়ে দিতে আপত্তি করেছিলেন জ্যোতি লক্ষ্মী কৃষ্ণার পরিবারের সদস্যরা। পরবর্তীকালে তিনি চাকরি করতে শুরু করেছিলেন। গায়ক হওয়ার পূর্বে চুটিয়ে অ্যাডের জিঙ্গল বানাতেন তিনি। আর তারপরেই তার প্রথম অ্যালবাম মুক্তি পায়।
১৯৯১ সালে কেকে’র প্রথম গানের অ্যালবাম ‘পাল’ মুক্তি পেয়েছিল, যা এক ধাক্কায় তাকে পরিচিত করেছিল বহু মানুষের কাছে। সেই বছরেই নিজের ছোটবেলাকার ভালোবাসার সাথে জীবন কাটানোর অঙ্গীকার নিয়েছিলেন গায়ক। জ্যোতি ও কেকের সন্তান কুন্নাথ নকুল। এরপর সঞ্জয় লীলা বানশালী পরিচালিত ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’এ ‘তাড়াপ তাড়াপকে ইস দিল সে’ গানের মাধ্যমে এক বিপুল পরিচিতি অর্জন করেন কেকে। এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক হিট গান উপহার দিয়ে গেছেন নিজের দর্শকদের।
উল্লেখ্য, ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’, ‘গ্যাংস্টার’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’, ‘কাইটস্’এর মতো একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে গান গেয়েছেন তিনি। তার জনপ্রিয় দুটি হিট অ্যালবাম ‘হামসাফার’, ‘পাল’। ‘হাম রহে ইয়া না রহে’, ‘তাড়াপ তাড়াপকে ইস দিল সে’, ‘খুদা জানে’, ‘আলবিদা’, ‘কেয়া মুঝে পেয়ার হ্যায়’, ‘আজাব সি’, ‘তুহি মেরি শব হ্যায়’এর মত অগুণতি হিট গান গেয়েছেন তিনি। শুরুতে গুলজারের ‘মাচিস’ ছবিতে ‘ছোড় আয়ে হাম ও গালিয়া’র কিছুটা অংশ গিয়েছিলেন তিনি। কয়েকদিন আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘শেরদিল’ ছবির জন্য রেকর্ডিং করলেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন গুলজারও। পরিচালকের সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় চোখ রাখলেই তার ঝলক মিলবে। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তার এই আকস্মিক চলে যাওয়া এখনো মানতে পারছেন না কেউই। মঙ্গলবার তার গাওয়া শেষ গানটাই তার জীবনের সবথেকে বড় সত্যি হয়ে দাঁড়ালো।
“হাম রহে ইয়া না রহে কাল
কাল ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পাল ..”