“শহর জুড়ে মাখছে শরত কাশফুলের মেলায়,
শহর জুড়ে প্যান্ডেল আর আলোর রোশনাই ।
শহর জুড়ে সাবেকি আর থিম
চেনা শহর ভোলবদলে আজ হয়েছে নবীন।। “
চারিদিকে সাজো সাজো রব ,দোকানে উপচে পড়া ভিড় জানান দিচ্ছে এবার দেবীর আগমনের পালা। প্রতিমা তৈরির প্রায় শেষের দিকে তাতে কেবল প্রানসঞ্চারের প্রতীক্ষা,প্রতীক্ষা মহালয়ার কারণ এই দিনেই হয়ে দেবীর চক্ষুদান শিল্পীর তুলির টানে জেগে উঠবে প্রতিমার ত্রিনয়ন মায়ের মধ্যে যেন প্রানসঞ্চার হবে সেদিন। এক অদ্ভুত জাদুতে মুছে যাবে দুঃখ মলিনতা।
কিন্তু সত্যি কি তাই? সার্বজনীন দুর্গাপুজো কি সত্যি সার্বজনীন হয়ে ওঠে? দীপ্ত প্রদীপের উজ্জ্বল শিখা চারিদিকের আঁধার মুক্ত করলেও প্রদীপের নিম্নতল থেকে যায় অধরা সেইরকম শারদীয়ার উৎসব এর আড়ালেও কিছু মানুষের অব্যক্ত কাহিনী থেকে যায়, থেকে যায় কিছু না পাওয়ার কথা-বেদনা ।সেই কাহিনী মনেহয় লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে যায় যেখানে পুরনো রঙ চটে যাওয়া একটা বছর পাচ বা ছয়ের বাচ্চা তার বাবার সঙ্গে এসেছে কিছুটা অবাক হয়ে দেখছে মানুষের ভিড় আর চকমকে জামার ঝলকানি। তার ঢাকি বাবাও দশমীর কাজের শেষে তাকে একটা জামা কিনে দেবে এই অপেক্ষার প্রহর গুনছে সেই বাচ্চাটি ।অথবা সেই বাচ্চাটার কথাও ভাবা যেতে পারে যার বাবা-মা কেউ নেই পরনে নোংরা একখানি বস্ত্র তাও সেটা শতছিন্নভিন্ন বা সেই বুড়ি ঠাকুমাটা যে কাজ করতেও সক্ষম নন, না আছে তার পরিবার এমনকী লজ্জা নিবারনের জন্য বস্ত্রটুকু নেই।
সত্যিই কি এদের মুখের বিষন্নতায় পরিপূর্ণ হতে পারে কোনো উৎসব? এদের কথা ভেবেই মনে হয় কবি সুব্রত পাল বলেছেন-
“তোমার দুর্গা মহালয়ার ভোরে ভোরে শরৎ মাখছে গায়
আমার দুর্গা এখনো দেখছি ফুটপাতে জন্মায় ..
আমার দুর্গা কবে বলো আর তোমার দুর্গা হবে আমার আকাশ ভরবে তোমার উৎসবে উৎসবে…”
সত্যি তো তাই যেখানেই মায়ের আগমনে বড়ো বড়ো প্যান্ডেল, বড় বড় ঝাড়বাতি,সাবেকি নাকি থিম এই আলোচনায় মশগুল সেখানে পড়ে থাকে এই মানুষগুলো ।কিন্তু মা দুর্গাতো দুর্গতিনাশিনী তিনি সকলের মা আর মা কিকরে সন্তানদের কষ্ট দেখতে পারেন ।তাই মায়ের আগমনের আড়ম্বরতার সঙ্গে সেই পথমানুষদের কথাও ভাবতে হবে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই পূজো হয়ে উঠবে সার্বজনীন ,উৎসব তখন পূর্ণতা পাবে যখন মায়ের সকল সন্তান আনন্দে সামিল হতে পারবে।
এটা ঠিক হয়তো সকলের কষ্টের সাথী হওয়া যায় না সকলের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয় না কিন্তু প্রত্যেকেই মনে করলে কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। তাদের সাহায্যের পরিবর্তে তাদের মুখের ভোরের সূর্যোদয়ের মতো রাঙা হাসি সকলকে শিক্ষা দেয় জীবনযুদ্ধ কতটা কঠিন ।সেই ছোট বাচ্চাগুলির পরনে নতুন জামা দেওয়ার পর তাদের নিষ্পাপ হাসিমুখ দেখলে মনে হবে এক বর্ষমুখর দিনের শেষে এক চিলতে রোদ্দুর ,মনে হবে যেন উমা ঘরের উঠোনে পদার্পণ করেছে।
প্রত্যেক মানুষ যদি কিছু মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে তাহলে কোনো মানুষকে অভুক্ত থাকতে হবে না।একটা ছোট্ট ছেলে পাড়ার দাদাদের কাছ থেকে পেয়েছে একটু ভাত আর ডাল। ওই টুকু খাবারে সে পেয়েছে পরম তৃপ্তি আর পরম মমতায় নিজের বোনের মুখে তুলে দিচ্ছে সেই খাবার ,এই দৃশ্য দেখে মনে হয় কত অল্পতে ওরা সন্তুষ্ট। সকলের সাহায্য পেলে এই সমাজে এই ছিন্নমূল শিশুরা এবং অন্যান্য মানুষেরা ফিরে পাবে আনন্দ।
আমরা পুজোতে নিজেদের জন্য কতো অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনি কত টাকা রেস্টুরেন্টে গিয়ে টিপস দিতে চলে যায় আমরা প্রত্যেকেই মনে করলে কিছু টাকা জমিয়ে তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারি পরিবর্তে আমরা পাবো তাদের নিষ্পাপ হাসিমুখ সঙ্গে প্রাণভরা আর্শীবাদ। তাই এইবার পুজো থেকেই শুরু হোক নতুন ভোরের ..বাড়িয়ে দেওয়া হোক সাহায্যের হাত আর কবি সুব্রত পালের ভাবনাও পরিপূর্ণতা লাভ করুক একটা আকাশ হবে যেখানে সবার অবাধ প্রবেশ…উৎসবের রঙে রঙিন হোক সকলে আমার দুর্গা তোমার দুর্গা মিলেমিশেএকাকার হয়ে যাক।
এই পথে সামিল হতে আপনারা বহরমপুরের “আগন্তুক” সংস্থার পাশে দাঁড়াতে পারেন। এইবার পুজো উপলক্ষ্যে 1st Oct কিছু বাচ্চাদের জামা দেওয়া হবে এছাড়াও পুজোর পরও নানাভাবে সাহায্য করার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আপনাদের সকলের মানসিক ও আর্থিক সহযোগিতা কাম্য। আপনাদের সাহায্য পেলে অনেকর মুখে হাসি ফোটাতে পারবো তাই ইচ্ছুক ব্যক্তিরা এগিয়ে আসুন। আপনি https://www.facebook.com/AgontukBHP page -এ যোগাযোগ করতে পারেন ও PhonePe -এর মাধ্যমে আমাদের সাহায্য করতে পারেন – 8537814710