পলিটিক্সনিউজরাজ্য

হাজির হতে বললেই এসএসকেএমে আশ্রয়, হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভূমিকাকে কটাক্ষ বিচারপতির

পার্থ চট্টোপাধ্যায় মামলায় এদিন তাকে ভুবনেশ্বরের এআইআইএমএস হাসপাতালে নিয়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী

Advertisement

মদন মিত্র হোক কিংবা ববি হাকিম, শোভন কিংবা অনুব্রত, প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং রাজনীতিবিদরা অসুস্থ হলে ভর্তি হয়ে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। উডবান ওয়ার্ডের দরজা যেন তাদের কাছে একেবারে অবারিত দ্বার। বারবার অসুস্থ হওয়ার এই অভিযোগ আদালতে বহুবার উঠেছে। আর এই তালিকা সম্প্রতি নাম জড়ালো আরেক প্রভাবশালী ব্যক্তি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। আদালতের হাজিরা এড়াতে কোনভাবেই এসএসকেএম তথা উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হতে পারবেন না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সেই নির্দেশের প্রায় মাস তিনেক পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়ার পর ভর্তি হয়ে গেলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। রাজ্য সরকারের অধীনে সেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে এবারে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি।

রবিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলায় কার্যত এসএসকেএম হাসপাতালকে ভৎসর্না করলেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। বিচারপতির নির্দেশে সোমবার সকালে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। রবিবার বিচারপতি বিবেক চৌধুরী সাফ জানিয়েছিলেন, এস এস কে এম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভূমিকায় তিনি খুশি নন। বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, সাম্প্রতিক ইতিহাসে যখনই কোন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিংবা তদন্তকারী সংস্থার সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে, তখনই এসএসকেএম হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন সেই নেতারা। এভাবেই নেতারা জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব সফলভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।

তিনি আরো বলেছেন, রাজনৈতিক নেতারা যখন বুঝতে পারেন তাদের আর জিজ্ঞাসাবাদ করার সম্ভাবনা নেই, তখনই তাদের এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে। এসএসকেএম এর দেওয়া মেডিকেল রিপোর্ট দেখিয়ে আদালতে হাজিরা এড়ানোর ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলায় তার পর্যবেক্ষণ, বর্ষীয়ান মন্ত্রী, যার অপরিসীম ক্ষমতা রয়েছে এবং যিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তার পক্ষে অন্য রাজনৈতিক নেতাদের সাহায্য নিয়ে গুরুতর অসুস্থতা এবং চিকিৎসার আড়ালে জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাজার হাজার যোগ্য প্রার্থীদের চোখের জলের অভিশাপ লাগবে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। শারীরিক পরীক্ষার জন্য প্রথমে তাকে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরে আদালত হেফাজতের নির্দেশ দেবার পরে হঠাৎ করে তিনি ভর্তি হয়ে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। এরপরে সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

Related Articles

Back to top button