শ্রেয়া চ্যাটার্জি: ২৩ বছরের তরুণ অরুণ প্রভু জেনি চেন্নাইয়ের একটি আর্কিটেকচার কলেজে পড়াশোনা করেন, যিনি রিসার্চ করছেন, বস্তিতে তৈরি হওয়া বাড়ি গুলোর উপরে। বস্তির এই বাড়ি গুলো দেখে তিনি খুব বিস্মিত হন। তার মনে হয়, বাড়ি গুলোতে প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ করা হলেও তাতে কোনো শৌচাগার নেই।
তার মতে, চেন্নাই এবং মুম্বাই তে যে সমস্ত বস্তু গুলি রয়েছে সেগুলোতে যদি সঠিক পরিকল্পনা করে বাড়ি গুলো বানানো যায় তাহলে সুন্দর করে সেইখানেই শোয়ার ঘর এবং শৌচালয় বানানো সম্ভব।
বস্তির অস্বস্তিকর পরিবেশ লক্ষ্য করে তার মাথায় একটি অদ্ভুত চিন্তা আসে, আর যেমন চিন্তা করা তেমনি কাজ করে ফেলেছেন। ১ লক্ষ টাকা খরচ করে একটা অটোরিক্সার মাথার ওপরে গোটা একটা আস্ত বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন। যার মধ্যে রয়েছে শোয়ার ঘর, শৌচালয় এবং একটি রান্নাঘর। অরুণ বলেছে এখানে অনায়াসে দুজন বড় মানুষ থাকতে পারেন।
অরুণ বলেন, তার এই ছোট্ট বাড়ি সত্যি সত্যি মানুষকে দেখাবে কি করে ছোট জায়গার মধ্যে ও সে তার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলি তৈরি করতে পারে। আর যেহেতু অটোরিকশার ওপর এ বাড়িটি বানানো তাই সহজেই কোন রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় এ বাড়িটিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। আর শুধু তাই নয় অরুন পুরো বাড়িটি বানিয়েছেন ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে। বাড়ির কাঠামোটি বানানো হয়েছে একটি পুরনো বাসের ফেলে দেওয়া কাঠামো থেকে। দেখে আপনি একদমই বুঝতে পারবেন না।
এর ভেতরে ঢুকলে দেখতে পাবেন চকচকে একটি শোয়ার ঘর। তার মতে, এটি যখন একটি অটোরিকশার ওপরে সুন্দরভাবে তৈরি করা গেছে, ইচ্ছা করলে যেকোনো গাড়ির ওপরেই এমন ঘর বানানো সম্ভব। অরুণের মতে, যারা বাইরে বাইরে গাড়ি নিয়ে কাজকর্ম করতে যায়, তাদের কোনো ঘরবাড়ি থাকে না, তারা যাযাবরের মতো জীবন-যাপন করে, তারা কিন্তু সহজেই এমন একটি ঘর তাদের যানবাহনের উপরে বানিয়ে নিতে পারেন প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বাঁচার জন্য।
অরুণের এই পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসনীয়। তার মনের ইচ্ছার মতন করে যদি সত্যি সত্যি তৈরি করা হয়, তাহলে বস্তির অস্বস্তিকর পরিবেশ আর থাকবে না। প্রাকৃতিক বিপর্যয় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, সেই ক্ষয়ক্ষতিও অনেকটা কমবে।