নতুন কায়দায় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব, কিভাবে বাঁচবেন? কিভাবে সুরক্ষিত রাখবেন আপনার টাকা? – AADHAAR CARD
দরকার নেই কোন ওটিপির, আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক ক্লোন তৈরি করেই জালিয়াতি করা যাচ্ছে এখন
বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে এই ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে বলে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে সারা ভারতে। কলকাতা এরকম সাইবার জালিয়াতির একাধিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তবে এবারে আর এটিএম থেকে নয় কিংবা আপনার ইউপিআই একাউন্ট হ্যাক করে নয়, আপনাকে আধারে রেখেই আধার কার্ড এবং আপনার আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নিচ্ছে জালিয়াতরা। সাইবার অপরাধীদের এই অদ্ভুত জালিয়াতির সিস্টেমকে নাম দেওয়া হয়েছে আধার এনাবেল পেমেন্ট সিস্টেম। এই লেনদেনের সঙ্গে এখনো বেশিরভাগ মানুষের পরিচয় ঘটেনি। আর সেটার আগেই ময়দানে নেমে পড়েছেন সকলে। কিন্তু কিভাবে এই অপরাধ চক্রের দুষ্কৃতীরা জালিয়াতি করছে? চলুন আজকে সেটাই জেনে নেওয়া যাক।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কিভাবে জালিয়াতি করা সম্ভব?
আধার এনামেল পেমেন্ট সিস্টেম একটি নতুন উপায় যার মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা অবধি তোলা যায়। শুধুমাত্র আধার কার্ড এবং থাম ইম্প্রেশন ব্যবহার করে এই টাকা তোলা যাবে। সরকার একটা নতুন উপায় নিয়ে এসেছে যার মাধ্যমে মানুষের সুবিধা হয়। কিন্তু এবারে মানুষ এটাকে ব্যবহার করছে জালিয়াতির মাধ্যম হিসেবে। বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা সরকারি পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড দিয়ে থাকি। কিন্তু সেটা একেবারেই উচিত নয়। সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা আধার কার্ড দিতে বাধ্য নই। সেই আধার কার্ড এবং থাম ইম্প্রেশন সংগ্রহ করে প্রচুর টাকা তুলে নিচ্ছে অপরাধীরা। ইতিমধ্যেই কলকাতায় প্রচুর মানুষের ১০ হাজার টাকা করে বেরিয়ে গিয়েছে। প্রপার্টি ডকুমেন্ট, দলিল এবং অন্যান্য বিভিন্ন জায়গায় যদি আপনার বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া থাকে তাহলে সেখান থেকে এই ছাপ কালেক্ট করা হচ্ছে। তারপরে আধার কার্ড এবং বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে টাকা তোলা যাচ্ছে।
তাই আপনাকে আগে থেকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। প্লে স্টোরে গিয়ে এম আধার অর্থাৎ মাই আধার অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিয়ে সেখানে আধার কার্ড রেজিস্টার করে বায়োমেট্রিক লক চালু করে রাখুন আপনি। অর্থাৎ আপনি এই বায়োমেট্রিক রাস্তাটি একেবারে ব্লক করে দিলেন। যদি আপনি আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক তথ্য ব্লক করে দেন তাহলে এই দুর্নীতি করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। আবার যখন আধার কার্ড দরকার পড়বে তখন এই লক আপনি খুলে দেবেন। যখন লাগবে না তখন বায়োমেট্রিক লক করে রাখবেন এবং যখন লাগবে তখন বায়োমেট্রিক ওপেন করবেন। আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে এই জালিয়াতি বন্ধ করা যাবে। অন্যদিকে বায়োমেট্রিক লক করে ভার্চুয়াল আইডি ডিজেবল করে রাখুন। তাহলে এই চুরি একেবারেই হবে না। নিজেদের টাকার নিরাপত্তা আপনাকেই করতে হবে।
সরকার এবং ব্যাংকের এই বিষয়ে দায় একটা নেওয়া উচিত। সরকার আধার কার্ড এবং ব্যাংকের একাউন্টের লিংক করা শুরু করেছে। কিন্তু যতগুলি ফিচার এই আধার কার্ডে দেওয়া হয়েছে সেগুলিকে বাই ডিফল্ট অফ রাখা উচিত। অন করে এই ফিচার ব্যবহার করা উচিত। যদি এটা করা যায় তাহলে দুষ্কৃতীরা এই ফিচার গুলি ব্যবহার করতে পারবেনা। তার পাশাপাশি, মোবাইল সিম তোলার সময় অনেক সময় ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হয় আপনাকে। সে ক্ষেত্রেও আপনাকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। সব মিলিয়ে কিন্তু বিষয়টা বেশ শক্ত হয়ে যাচ্ছে আজকের দিনে।