Aadhaar Card: জাল আধার কার্ড তৈরির জন্য ৮ কোটি টাকা জরিমানা হলো এই আধিকারিকদের, কঠোর পদক্ষেপ নিল সরকার
সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বড় ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার
বিহারে আধার কার্ড তৈরির সময় একটা বড় ধরনের অনিয়মের ঘটনা সামনে এসেছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আধার তৈরিকারী ২২১৫ জন অপারেটরকে প্রায় ৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে । এর মধ্যে ২৩ জন অপারেটরকে ১৬৪৩টি ভুলের জন্য ১৭.১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া ( ইউআইডিএআই ) এর রাঁচি আঞ্চলিক অফিস এই পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে ।
২৩ অপারেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, ১৭ লক্ষ টাকা জরিমানা
জেলার বিদ্যালয়গুলোতে ভিত্তি নির্মাণে অনিয়ম হওয়ার কারণে এসব অপারেটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিহারের মাধ্যমিক শিক্ষার বোর্ড ডিরেক্টর যোগেন্দ্র সিং জেলা শিক্ষা অফিসারদের জরিমানা আদায় করে জেলা অফিসের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে তৈরি ঘাটতি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের অনিয়মের প্রতিবেদন এখনো তদন্তাধীন রয়েছে এবং শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে
জেলার আধার কেন্দ্রগুলির অবস্থা
জেলায় মোট ৩১টি আধার কেন্দ্র চালু ছিল, যার মধ্যে ২৪টি ইতিমধ্যেই বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি কেন্দ্র কালো তালিকাভুক্ত এবং ১৯টি কেন্দ্র নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এই প্রতারণার কেন্দ্রে থাকা তিন অপারেটরই মূলত রাডারে, যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিন অপারেটরের বড় ভুল
পিরপাইন্টি ব্লকের তারিক আনোয়ার ১৬৮টি ভুল আধার নথি তৈরি করেছেন, গোপালপুর ব্লকের মুকেশ কুমার মণ্ডল ১৭৮টি ভুল করেছেন এবং নবগাছিয়া ব্লকের ভিকি কুমার ১০৭টি ভুল আধার নথি তৈরি করেছেন। এই তিন অপারেটরকে মোট চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
৫ অপারেটর কালো তালিকাভুক্ত, ১৮ জনের জন্য প্রশিক্ষণ নির্দেশাবলী
UIDAI-এর রাঁচি আঞ্চলিক অফিস জেলার পাঁচজন অপারেটরকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে – প্রদীপ কুমার, তারিক আনোয়ার, রবি ঝা, মুকেশ কুমার মন্ডল এবং ভিকি কুমার। এদেরকে এক বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে UIDAI। তাদের আধার কার্ড তৈরির সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, অনিয়ম এড়াতে আরও ১৮ জন অপারেটরকে পুনরায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
রাজ্যজুড়ে আট কোটি টাকা জরিমানা
বিষয়টি শুধু একটি জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আধার কার্ড তৈরিতে অনিয়মের জন্য রাজ্য জুড়ে ২২১৫ জন অপারেটরকে ৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব অপারেটরদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে জেলা কার্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে সব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নোডাল অফিসারদের জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন
জেলা শিক্ষা আধিকারিক (ডিইও) রাজকুমার শর্মা বলেছেন যে আধার মামলায় নোডাল অফিসারদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এখন পর্যন্ত নোডাল অফিসাররা অপারেটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি বা বিভাগে সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা দেননি।
আধার অনিয়মের প্রধান দোষী
যে অপারেটরদের জরিমানা করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রদীপ কুমার, লালন কুমার মণ্ডল, তারিক আনোয়ার, মুকেশ কুমার মণ্ডল, ওম কুমার, রবি ঝা, তনয় কুমার ভরদ্বাজ, মোহাম্মদ আফজাল আনসারি, মোহাম্মদ শাহরুখ, মোহাম্মদ আফসার আনসারি, পাপ্পু কুমার সিং, আরতি, পঙ্কজ কুমার, সঞ্জীব কুমার, পুনীত কুমার, প্রিয়জিৎ কুমার, যুগেশ কুমার, কুশ কুমার, নিরঞ্জন কুমার, নীতিশ কুমার, মনীশ কুমার, অভয় কুমার ও ভিকি কুমার।
ত্রুটি প্রতিরোধের পদক্ষেপ
গোটা ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে শিক্ষা দফতর। মাধ্যমিক শিক্ষা পরিচালক স্পষ্ট করেছেন যে কোনও অপারেটরকে নিয়ম লঙ্ঘনের স্বাধীনতা দেওয়া হবে না। বিভাগটি অপারেটরদের আধার নির্মাণের প্রক্রিয়াগুলিকে সঠিকভাবে বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিতে এবং যে কোনও ধরনের অনিয়ম এড়াতে নির্দেশ দিয়েছে।
নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়বে
আধার কার্ড তৈরিতে এই ধরনের অনিয়ম শুধুমাত্র নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে না, সরকারি প্রকল্পগুলির স্বচ্ছতা এবং কার্যকারিতাকেও বাধা দেয়। UIDAI এবং রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ আধার কার্ড প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।