বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে যথেষ্ট স্থিতিশীল। তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা আগের থেকে বেশ কিছুটা বেড়েছে। তাঁর জ্বর নেই। সৌমিত্রবাবুর রক্তচাপ স্বাভাবিক। তাঁর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সচল রয়েছে। গতকাল তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এছাড়া তাঁর মূত্রথলিতে সংক্রমণ কমছে। সৌমিত্রবাবু চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। বেলভিউ সূত্রে জানা গেছে যে,সৌমিত্রবাবুর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে। সৌমিত্রবাবু 2006 সাল থেকে সিওপিডির পেশেন্ট। কো-মর্বিডিটি ও বার্ধক্যজনিত কিছু সমস্যা এখনও রয়েছে অভিনেতার। তাই অভিনেতাকে এখনও সঙ্কটমুক্ত বলছেন না চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সৌমিত্রবাবুর স্নায়ুজনিত অস্থিরতা কাটাতে মিউজিক থেরাপির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। শরীরে অক্সিজেনের তারতম্যের কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বাইপ্যাপ সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে সৌমিত্রবাবুকে ,তবে তা দিনে ছয় ঘন্টার বেশি নয়। তাঁর তন্দ্রাভাব আগের থেকে কিছুটা কেটেছে। তিনি চোখ খুলে তাকাচ্ছেন এবং ডাকলে সাড়া দিচ্ছেন। তবে সৌমিত্রবাবুর পুরানো ক্যান্সার তাঁর মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ছে। এই কারণে চিকিৎসকদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। তাঁর এম.আর.আই ও সিএসএফ রিপোর্ট বিশ্লেষণ করছেন চিকিৎসকরা। সৌমিত্রবাবুর খাবার ইচ্ছে না থাকলেও তাঁর রাতের ঘুম ভালো হচ্ছে।
গত 6 ই অক্টোবর বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। তাঁর করোনা সংক্রমণ হয়েছিল। সেই সময় তাঁর শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা ছিল অস্বাভাবিক। এছাড়া তাঁর শ্বাসকষ্ট ছিল। সিটি স্ক্যান করে তাঁর বুকে কিছু মেলেনি। কিন্তু এম.আর.আই রিপোর্টে জানা যায় তাঁর মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে পুরানো ক্যান্সারের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। একই সাথে তাঁর মূত্রথলির সংক্রমণ ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সৌমিত্রবাবুর শরীরে দুই বার প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু আকস্মিক তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে দেওয়ার কথা ভাবা হয়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তাঁর কন্যা পৌলমী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন যে তাঁর বাবা আগের থেকে ভালো আছেন। পৌলমী শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানান। এই মুহূর্তে 16 জন চিকিৎসকদের বিশেষ একটি টিম তাঁকে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখছেন। একজন করে চিকিৎসক চব্বিশ ঘন্টা তাঁর কাছে রাখা হচ্ছে।