কলকাতা: করোনা পরিস্থিতির জেরে আজ বহু মানুষ কর্ম হারা। তা সে ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক হোক বা আইটি সেক্টরে কর্মরত আইটি কর্মী। সকলেই কার্যত দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ের জন্য নাজেহাল হয়ে পড়ছে। পরিচয় শ্রমিকদের কথা যদি বলি তাহলে চিত্রটা আরও ভয়ংকর। পেটে খিদে, বাড়িতে ছোট ছোট সন্তান, হেঁসেলে গিয়ে দেখে খাবার নেই যে সন্তানের মুখে তুলে দেবে মা। তবু হাসি মুখে যেন সব লড়াইকে জয় করার একটা চেষ্টা। আর এই চেষ্টাটা বোধ হয় একজন মা-ই করতে পারে। আর এই মাকেই এবারে নিজেদের দুর্গা পূজোর থিম হিসেবে তুলে ধরতে চলেছে বড়িশা ক্লাব।
বেহালার এই বহু প্রচলিত ক্লাব এবার পরিযায়ী শ্রমিকের মায়ের কান্নার কাহিনী তুলে ধরবে তাদের থিম দিয়ে। পরিচয় শ্রমিকের মাকে দেবী দুর্গার রূপ দেওয়া হয়েছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই থিমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ত্রাণ’। অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ লকডাউনের পর পরিযায়ী শ্রমিকরা যখন রাজ্যে ফিরছিল, সেই সময় তাদের কীভাবে নাজেহাল হতে হয়েছে বা বলা ভাল একটু ত্রাণের জন্য তাদেরকে কতটা কষ্ট করতে হয়েছে সেটাই এবারে তুলে ধরবে দক্ষিণ কলকাতার এই পুজো কমিটি।
শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় এই থিম বাস্তবায়িত করা হবে বরিশা ক্লাবে। এ প্রসঙ্গে শিল্পী বলেছেন, ‘পেটে খিদে নিয়ে, চড়া রোদ মাথায় নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের মাকে হাজার হাজার মাইল পথ হাঁটতে হয়েছে। সন্তানের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মা। এমনকি খাবার তো দূরে থাক, একটু জলের জন্য কম কষ্ট করতে হয়নি পরিযায়ী শ্রমিক এবং তার মাকে। আর তাই এই ভাবনা ভাবা হয়েছে।’
জানা গিয়েছে, বড়িশা ক্লাবের মা দুর্গার হাতে কোনওরকম অস্ত্র থাকবে না। বরং আট হাতে থাকবে আটটি ত্রাণের থালি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই থিম একেবারে যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছেন শিল্পী রিন্টু দাস। পুজো হলেও এবারের পুজো অন্যবারের থেকে অনেকটাই আলাদা। একটা বেদনাদায়ক এবারের পুজো। আর তাই সেই বেদনাকে আরও একবার সকলের সামনে চোখে আঙুল দিয়ে তুলে ধরতে প্রস্তুত হয়ে রয়েছে বড়িশা ক্লাব।