গতকাল থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে তৃণমূল বিজেপি দ্বন্দ্ব নিয়ে পরিবেশ বেশ সরগরম। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও অন্যান্য বাংলা গেরুয়া শিবিরের প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীরা গতকাল ডায়মন্ড হারবারে জনসভায় যাওয়ার সময় বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে। তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা ইট, পাথর, কাচের বোতলের নিক্ষেপ করে। এর জেরে আহত হন মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ একাধিক বিজেপি নেতাকর্মী। বিজেপির অভিযোগ এই সমস্ত কাজ করেছে তৃণমূলের গুন্ডারা। আর তার জেরেই আজ সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলা সফরে আসার ঘোষণা করেন।
আগামী ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলা সফরে আসছেন। এখানে এসে তিনি শুধুমাত্র যে কলকাতায় সভা করবেন এমন না। সেই সাথে তিনি রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে সভা করার ঘোষণা করেছেন। সেই সাথে তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তলব করেছেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশের ডিজি শ্রী বীরেন্দ্র কে ১৪ তারিখ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সাথে দেখা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয় হামলার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তলব করা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
তবে অমিত শাহ যে ব্যাপারটিকে নিয়ে বেশ ভাবছেন তা বোঝাই যাচ্ছে। গতকাল জেপি নাড্ডা হামলার ঘটনার কথা অমিত শাহকে জানানোর পর তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যপালের সাথে যোগাযোগ করেন। ঘটনা কি হয়েছে তার বিস্তৃত বিবরণ চেয়ে রাজ্যপালকে রিপোর্ট পাঠাতে আদেশ দেন তিনি। এদিন অবশ্য রাজ্যের রাজ্যপালও শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গতকাল রাত্রে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিজি রাজ্যপালের সাথে রাজভবনে বৈঠক করতে যায়। তবে সেই বৈঠকে তারা নাড্ডার কনভয়ে হামলা সংক্রান্ত কোনো উত্তর দেননি বলে তিনি দাবি করেছেন। তাদের কাছে রাজ্যপাল ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চান। আর সেই রিপোর্ট না দেওয়াতে টুইটারে রাজ্যপাল ধনকর তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1337046298315403273?s=20
অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেন, “রাজ্য কোনদিন চিফ মিনিস্টার চলে আসবে, কোনদিন হোম মিনিস্টার, কোনদিন চাড্ডা, কোনদিন নাড্ডা আবার কোনদিন ফাড্ডা, একের পর এক চলতেই থাকে। আর যদি জনসভায় লোক না আসে, একটা হামলার ভিডিও বানিয়ে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে নাটক করবে। দেখো আমায় মেরেছে, আহা রে!” জনোনেত্রী এই বক্তব্য তেও চরম চটেছেন রাজ্যপাল। তিনি টুইট করে মুখ্যমন্ত্রীকে তার মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চেয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1337050103241207811?s=20