জীবন যুদ্ধ নাকি জীবনের সাথে যুদ্ধ!- বলা বা মন্তব্য করা এক কঠিন ব্যাপার, তাই না? সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের দৌলতে বিশ্ববাসী আজ বিপর্যস্ত। সব পথই আজ বন্ধ। বাড়িতে বসে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। এ যেন এক অন্তত বিরতি। শুধু ছুটি আর ছুটি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধুমাত্র চারদেয়ালের মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক অর্থহীন খেলা চলছে। কেউ জানে না এই নির্মম খেলার সমাপ্তি কোথায়! যদি একটু আভাসও পাওয়া যেন, জীবনটা একটু সহজ করে বাঁচা যেত!
কিন্তু এই করোনাকে কেন্দ্র করে বরং বলা ভালো অস্ত্র বানিয়ে, বহুজন বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করছেন সময়টা। কাজের মধ্যে তাড়াতাড়ি বাজার করে বাড়ি ফেরা আর কিছুক্ষণের জন্য ল্যাপটপ খুলে অফিসিয়াল কাজ সমপূর্ণ করা। ব্যাস! এবার শুধু বিনোদন আর বিনোদন! হেডফোনে গান শোনা থেকে শুরু করে টিভি দেখা থেকে মুখরোচক গল্পগুজব, সবই আছে প্লেটে! কিন্তু এত লম্বা ছুটি বোধকরি কোনো কোম্পানি তা মাল্টিন্যাশনালই হোক বা ছোটখাট, কখনও মনজুর করেনি তার কর্মীকুলকে! আপাত দৃষ্টিতে এক আশীর্বাদ মনে হলেও, পর্দার আড়ালে এক অভিশাপ ছাড়া কিছুই নয়!
অনেকে এই সম্পূর্ণ বিষয়টাকে “জীবন যাত্রা বা লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন” বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁরা অনেকেই হয়ত জানেন না যে বহু সংহস্তা অলরেডি তাদের কর্মীদের নোটিস পিরিয়ড জানিয়ে দিয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৪০ কোটি মানুষ তাদের জীবিকা হারাবে। বৃদ্ধি পাবে দারিদ্রতা। বৃদ্ধি পাবে সামাজিক অপরাধ। বৃদ্ধি পাবে খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ। তাই আজ এই ছুটির আনন্দের আড়ালে যে সত্য বর্তমান, তা বোঝাবার সময় হয়েছে। এই লকডাউন আমাদের সুরক্ষার প্রয়োজনে, ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করবার অবকাশ রূপে একেবারেই নয়! আপনাদের কি মতামত!!
– কুণাল রায়