লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরনো বই সংগ্রহ করে গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেয় এই যুবক
শ্রেয়া চ্যাটার্জি – যারা ভাবেন তাদের সন্তানকে দুবেলা-দুমুঠো খাওয়াতে পারেন না, তারা কি করে পড়াশোনা করাবেন? তাদের জন্য বোধহয় এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়। হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলার ধানী মাউ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কুমার। দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা করার জন্য তিনি গ্রামে দিয়েছিলেন। তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি চণ্ডীগড়ে চলে আসেন। গ্রাজুয়েশনের পরে তিনি জুনিয়র বেসিক ট্রেনিং কোর্স করেন। এই ট্রেনিং এর শেষ বছর তিনি কাজ করেছিলেন ভিরাণীর একটি সরকারি বিদ্যালয় এ। সেখানে গিয়ে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে অদ্ভুত একটি জবাব পান, তারা বলেছিল ‘আমাদের কোন খাতা বই পেন পেন্সিল নেই মাস্টারজি’।
সর্বশিক্ষা অভিযান এর তরফ থেকে প্রত্যেকটি সরকারি বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর বই, খাতা দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরে উচ্চ শিক্ষার জন্য যে বই-খাতা প্রয়োজন হয়, তা এই সমস্ত জায়গায় মানুষদের পক্ষে ব্যয় করা সত্যিই খুব কষ্টসাধ্য। এসব দেখে কুমার ভেঙে পড়েন। চন্ডিগড় এ ফিরে এসে তিনি ওই একই বিষয় লক্ষ্য করেন সমস্ত সরকারি স্কুল কলেজগুলোতে। এরপরই তার মাথাতে আসে এই অনবদ্য ভাবনাটি। লোকের দরজায় দরজায় গিয়ে তিনি বই জোগাড় করতে শুরু করেন। তিনি পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন ‘রদ্দি সে শিক্ষা’। এটি ছাড়াও ওপেন আইজ ফাউন্ডেশন নামে এনজিও বস্তিবাসী বিভিন্ন বাচ্চাদের বিনামূল্যে পড়াশোনা করায়। শুধু তাই নয় মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করা হয় স্যানিটারি ন্যাপকিন। এছাড়াও ঋতুস্রাবের সময় মহিলাদের কতটা যত্ন নিজেদের রাখা উচিত সেই সম্পর্কেও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।
আমাদের দেশে কুমারের মতন মানুষের প্রয়োজন আছে। তবে আপনিও যদি একটু চেষ্টা করেন, আপনার বাড়ির বাচ্চাটির পুরনো বই বিক্রি না করে দিয়ে কোন এমন বাচ্চার হাতে তুলে দিতেই পারেন যার পড়াশোনা করার ইচ্ছা আছে, অথচ অর্থের অভাবে পড়তে পারছে না। বেশি জন কে সাহায্য নাইবা করলেন, কিন্তু মনের ইচ্ছা থাকলে যদি একটি বাচ্চাও আপনার দেওয়া পুরনো বইয়ের জন্য পড়াশোনা করে, তাহলেই তো পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠবে। এই বাচ্চারাই তো আমাদের দেশের এবং গোটা বিশ্বের ভবিষ্যৎ।