এবারে ত্রিপুরায় তৃণমূল কর্মীদের প্রতি হামলার ঘটনায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দিনেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করে বক্তব্যও রাখলেন তিনি। আজকে পিজি হাসপাতালে এই আক্রমনের শিকার সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্তকে দেখতে গেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতালের বাইরে দাড়িয়েই মমতা বললেন, “ত্রিপুরায় দানবীয় দল চালাচ্ছে বিজেপি। আমাদের ছেলে মেয়েদের ওপরে হামলা হচ্ছে, তাও আবার পুলিশের সামনেই। আর ত্রিপুরার পুলিশ কিছু করছেনা। অভিষেকে জীবনে ঝুঁকি আছে। সমস্ত কিছু করছে অমিত শাহের নির্দেশে।”
সকাল সোয়া ১১টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে আহত কর্মীদের দেখতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে সরাসরি ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি সুদীপ রাহা সঙ্গে দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে ২০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা জয়া দত্তের সঙ্গে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে দুজনকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমনে নামেন মমতা। হাসপাতালের বাইরে থেকে তিনি সরাসরি অমিত শাহ এর বিরুদ্ধে এই হামলার দোষারোপ করেন। তিনি সরাসরি বলেন, “ত্রিপুরাতে দেবাংশু ওরা গেছিল। সেখানে গিয়ে আমাদের ছাত্র ছাত্রীদের উপর হামলা করা হয়েছে। ওদের উপরে পাথর মারা হয়েছে গুলি চালানো হয়েছে। সুদীপের মাথা ফেটে গেছে। জয়ার গাল কান ফাটিয়ে দিয়েছে ওরা। ওদের ৩৬ ঘন্টা চিকিৎসা করতে দেওয়া হয়নি। একেতো ওরা মেরেছে, ওরাই আবার গ্রেফতার করেছে। কাউকে এক গ্লাস জল দেওয়া হয়নি। বিজেপি ত্রিপুরায় দানবীয় শাসন চালাচ্ছে।”
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করার পর দেবাংশু ভট্টাচার্য এর সঙ্গে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি দেবাংশু ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন বলে খবর। অন্যদিকে, হাসপাতাল সূত্রে খবর, জয়া দত্তের কানে সমস্যা এসেছে। তার কানে ভোঁ ভোঁ করছে বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে সুদীপ রাহার মাথা ফেটে যাওয়ার পরে সেই জায়গায় ঐদিন অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন। তাদের দুজনের চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে অত্যন্ত উদ্বেলিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রবিবার এই তিনজন যুব নেতাকে ত্রিপুরা থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
সূত্রের খবর সেই সময় তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্ত বলেছেন, “ত্রিপুরাতে বিজেপির বিপ্লব দেবের বিপ্লব শেষ হয়ে গেছে। চিকিৎসা শেষে আবারও আমরা ত্রিপুরা অভিযান করব।” অন্যদিকে এখনো পর্যন্ত ত্রিপুরায় অবস্থান করছেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ সহ আরো অনেকেই। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সরাসরি ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে মন্তব্য রেখেছেন আজকে। কুনাল ঘোষের বক্তব্য, বিজেপির নেতারা এই হামলার বিষয়ে কিছুই পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। অন্যদিকে গতকাল ত্রিপুরার খোয়াই থানার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে সরাসরি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রেপ্তার হওয়া যুব কর্মীদের বিরুদ্ধে এক টানা আন্দোলন চালিয়ে ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে রবিবার আগরতলার একটি বিশেষ আদালতে গ্রেপ্তার হওয়া যুব নেতা নেত্রীদের জামিন মঞ্জুর হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থানার বাইরে দাঁড়িয়ে সরাসরি আক্রমণ করেন পুলিশকে। তিনি বলেন, “চাকরি বাঁচানোর জন্য পুলিশ ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে রয়েছে। ত্রিপুরা বিপ্লব দেবের সরকারের অবসান দরকার।”