শ্রেয়া চ্যাটার্জি – কচুয়া হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট ব্লকের একটি গ্রাম। এটি বারাসাত থেকে প্রায় ২৯ কিলোমিটার পূর্বে। বসিরহাট থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। কলকাতা থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে। ১৭৩০ কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী তিথিতে লোকনাথ জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম রাম নারায়ণ ঘোষাল এবং মাতা কমলাদেবী। তিনি ছিলেন বাবা-মার চতুর্থ সন্তান। তবে অনেকেই বলেছিলেন তার জন্মস্থান চাকলা গ্রামে। কচুয়া ধাম, না চাকলা ধাম এই নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে। তবে যাইহোক, মন্দিরের খোঁজে বাবা লোকনাথের তিরোধান দিবসে আজকে আমাদের গন্তব্য কচুয়া ধাম।
বারাসাত বসিরহাট রুটে স্বরূপনগর বাসস্টপ থেকে অথবা ভ্যান রিক্সা করে ১০ মিনিটে পৌঁছানো যেতে পারে কচুয়া ধামে। ট্রেনে করে আসলে শিয়ালদা – হাসনাবাদ লোকালে উঠে নামতে হবে কাঁকড়া মির্জানগর স্টেশনে। স্টেশনের পাশে থেকে ছাড়ছে মোটর ভ্যান, অটো, যাতে করে দশ মিনিটেই পৌঁছানো যেতে পারে কচুয়া ধামে। মন্দিরে ঢোকার পথে দুদিকে দেখবেন মন্দিরের পুজো দেওয়ার জন্য পুজো সামগ্রীর দোকান। মন্দিরটি বেশ সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশে গাছগাছালিতে ভরা প্রকৃতির মধ্যে তৈরি করা হয়েছে।
মন্দিরে প্রধান মূর্তির সামনে রয়েছে বিশাল বড় বসার জায়গা। পুণ্যার্থীরা গিয়ে বাবা লোকনাথকে দর্শন করার জন্য বসতে পারেন। ছিমছাম মন্দিরের কারুকার্য। এখানে গেলেই প্রশান্তিতে মনটা ভরে যাবে। বিশেষ করে যারা কলকাতার দিকে থাকেন, সারাক্ষণ কংক্রিটের জঙ্গলে থাকতে থাকতে মনটা যখন হাতে উঠবে, তখন এমন গ্রাম্য পরিবেশের লোকনাথ মন্দির দর্শনে জীবনটা সার্থক বলে মনে হবে। পুজো দেওয়ার পর আপনি এখানে ভোগ প্রসাদ খেতে পারেন রয়েছে, তারও সুবন্দোবস্ত। তার জন্য আপনাকে ৪০ টাকার একটি কুপন কাটতে হবে। মন্দিরের রাস্তার ঠিক উল্টো দিকে রয়েছে লোকনাথের বাল্যবন্ধু বেণীমাধবের বাড়ি। এই বাড়িটিও দর্শনীয় স্থান। পুরনো বাড়িটার অস্তিত্বকেই বজায় রেখে একটু ঠিকঠাক করে দর্শকদের দেখার উপযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই মন্দিরটিকে ঘিরে আশেপাশে তৈরি হচ্ছে পিকনিক স্পট, থাকার জায়গা, গেস্ট হাউস। বাবা লোকনাথের জন্ম তিথিতে এখানে বেশ ভিড় হয়। তাছাড়াও শীতকালে এই মন্দিরে অনেকেই বেড়াতে যায়। আশেপাশের খোলা পরিবেশে একটু শ্বাস নেওয়ার জন্য এই জায়গাটি বেশ মনোরম।