Trending NewsAppleNYT GamesCelebrity NewsWordle tipsBig 12 SoccerCelebrity BreakupsKeith UrbanUnited Nations Day

এবারে কি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের পথে পা বাড়াচ্ছেন বাবুল? জোরালো হচ্ছে জল্পনা

Updated :  Sunday, July 11, 2021 5:42 PM

দিন কয়েক হলো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীবর্গ থেকে বাদ পড়েছেন। এখন তিনি শুধুমাত্র একজন সাংসদ। মোটামুটি বাংলাতে সবাই জানেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের কারিশমা খুব একটা কাজ করেনি, যেটুকু কাজ করেছিল সেটা হলো মোদি হাওয়া এবং দীলিপবাবুর ট্যাকটিকস। তাই আপাত পক্ষে সাংসদ হলেও তিনি কতটা জনপ্রিয় এবং জনগনের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন করার অবকাশ থাকে। তার মধ্যেই আবার দিন কয়েক আগে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে অরূপ বিশ্বাস এর কাছে একটা বড় মার্জিনে হেরে এসেছেন।তাই, বাবুল সুপ্রিয়র জনপ্রিয়তা অনেকটা ভাটা পড়েছে বলাই যায়। এমনকি তার নিজের লোকসভা আসন আসানসোলে আনকোরা রাজনীতিতে আসা সায়নী ঘোষের সঙ্গে লড়াই করতে অগ্নিমিত্রা পাল কে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে বলতে হবে। জয়লাভ করলেও দুজনের ভোটের তফাৎ কিন্তু খুব একটা বেশি ছিল না। তারপর থেকেই বাবুল সুপ্রিয়র জনপ্রিয়তা এবং রাজনীতিতে তাঁর অবদান নিয়ে জল ঘোলা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে।

অন্যদিকে আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বাদ পড়ার পরে ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একেবারে গর্জে উঠেছেন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বারবার জাহির করার চেষ্টা করছেন তাকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। গত বুধবার যখন তিনি ইস্তফা দিলেন তারপর এই ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট লিখেছিলেন যেখানে তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বলেন, তারা তাকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র যে রাজনৈতিক টালমাটাল রয়েছে সেটা সকলেরই জানা। এরকম পরিস্থিতিতে টানা সাত বছর সক্রিয় রাজনীতিতে থাকার পর রাজনীতি থেকে কি পুরোপুরি বিদায় নিতে চলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়? গত কয়েক দিনে তার ব্যবহারিকে গতি প্রকৃতি দেখে কিছুটা সে রকম মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নিজের টুইটার প্রোফাইল বায়ো বদলে ফেলেছেন এই রাজনীতিবিদ। ফেসবুকে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ তো বটেই সরাসরি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে পিছপা হননি বাবুল সুপ্রিয়। এমনিতেই বাবুল সুপ্রিয় এবং দিলীপ ঘোষ এর মধ্যে একটি দ্বৈরথ চলতে থাকে। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, বাবুল সুপ্রিয়অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কাজ করে। এই পরিস্থিতিতে তিনি নিজের টুইটার প্রোফাইলের বায়ো বদলে ফেলে রাজনীতিতে সন্ন্যাস নেওয়ার নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন। পাশাপাশি, বাবুল সুপ্রিয় যে রাজনীতি নিয়ে অত্যন্ত বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন সেই বিষয়টা একেবারে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।

বাবুল সুপ্রিয় রাজনীতিতে এসেছেন অত্যন্ত নাটকীয় ভাবে। কিন্তু যদি তিনি রাজনীতি থেকে চলে যেতে চান তাহলে তিনি আসানসোল লোকসভা আসনের সাংসদ পদ সরাসরি ছেড়ে দেবেন। বাবুলের যারা পরিচিত রয়েছেন তারা মনে করছেন তেমনটা হলে তারা খুব একটা অবাক হবেন না। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুলের সম্পর্কের টানাপোড়েন বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে হটকেক হয়ে উঠেছে। মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরে যে ফেসবুক পোস্ট তিনি করেছিলেন সেখানে তিনি সরাসরি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। তার পাল্টা জবাবে একটি ঝাঁঝপূর্ণ মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যে এই বিষয়টি নিয়ে শোকজ করা হতে পারে সেটাও তিনি জানেন।

তার মধ্যেই তিনি নিজের টুইটার বায়ো পরিবর্তন করে লিখেছেন তিনি, ভালোবেসে রাজনীতি করতে আসেননি, বরং তিনিকাজ করার জন্য রাজনীতিতে এসেছেন। এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে বাবুল সুপ্রিয় হয়তো ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাইছেন না কিন্তু ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বাবুল সুপ্রিয় এখন রাজনীতি থেকে কিছুটা বিরতি নিচ্ছেন। তবে বাবুল সুপ্রিয় সরাসরি রাজনীতি থেকে বিদায় নেবেন কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো পর্যন্ত জানা যায় নি। তবে বাবুল এখনো পর্যন্ত হ্যাঁ যেমন বলেননি কিন্তু না ও বলেননি। ফলে এখনো পর্যন্ত বাবুল সুপ্রিয়র রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চলছে।

তার পাশাপাশি আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয় একটা আলাদা সমীকরণ গঠন করার চেষ্টা চলছে। যখন বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছিলেন তখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ওরা আবার কি দোষ করল!” (এখানে যদিও দেবশ্রী চৌধুরীরও কথা বলা হয়েছে)। অন্যদিকে, মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরে আসানসোলের আরো এক বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি তার পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন, ” বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রী থাকার সময় কাজ করেছেন, মন্ত্রী না থাকলেও তিনি কাজ করবেন। ” এই জিতেন্দ্র তিওয়ারি একটা সময়ে বারবার দলবদল করছিলেন। তারপরে তিনি এখন পদ্মফুলে বসলেও, তিনি যে জোড়া ফুলে যাবেন না এরকম কোন নিশ্চয়তা নেই। তারি মাঝে আবার ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা বন্দোপাধ্যায় কে নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাবুল। তাহলে কি ধীরে ধীরে মমতা এবং বাবুলের মধ্যেকার বরফ গলতে শুরু করেছে? ‘কাজ’ করার জন্য কি তাহলে পদ্মফুল থেকে জোড়া ফুলে যাবেন বাবুল? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধ্যান ধারণা কিন্তু সেদিকেও ইঙ্গিত করছে বটে।