একদিকে বাংলায় শীতের আমেজটা জাঁকিয়ে পড়ে তাপমাত্রা পারদ নিম্নমুখী, আবার অন্যদিকে রাজনীতির পারদ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যে। আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি ভোট যুদ্ধ জয়ের উদ্দেশ্যে লড়াইয়ের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কোন রাজনৈতিক দল অন্যকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেবে না। এরইমধ্যে বাংলার প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল ও বিজেপি দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। এমনকি ভোট প্রচার উদ্দেশ্যে বিজেপি দিল্লি থেকে গুজরাট বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের বাংলায় নিয়ে চলে এসেছে। এমনকি বঙ্গবাসীদের মন পেতে বাংলা ভাষা শিখছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
গত রবিবার “মন কি বাত” অনুষ্ঠানে মোদি ঋষি অরবিন্দ এবং কবি মনোমোহন বসুর কবিতা একেবারে সরগরম ভঙ্গিতেই উচ্চারণ করেছেন। তা শুনে রীতিমত অবাক গোটা রাজ্যবাসী। তবে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা শেখার পেছনে যে রাজনীতি আছে তা খুবই স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবাসীর ফেভারিট হওয়ার জন্য বাঙ্গালীর ইমোশন বাংলা ভাষা শিখছেন। আসলে মোদি হয়তো বাংলা প্রীতির নেপথ্যে বাঙালি ভোটব্যাঙ্ক আদায় করার চেষ্টা করছে। এই ব্যাপারের তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মোদির বাংলা শেখাতে কৃতিত্ব দিতে একেবারেই নারাজ। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, “টেলিপ্রচারের সময় অসম্ভবকে সম্ভব করাও যায়। গুজরাটি হরফে বাংলা লিখে বাংলা উচ্চারণ করা কোন ব্যাপারই না। আমিও বাংলা হরফে লিখে দিলে গুজরাটি কথা বলে দেব। কেউ কেউ বাংলা বলতে পারছে বলে অযথা মাতামাতি করার কিছু নেই।”
এছাড়াও এদিককার বৈঠকে তিনি তার বিরুদ্ধে বিজেপি নেতাদের তোলা আঙ্গুলের বক্তব্যকে নাকচ করেছেন। তিনি স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছেন যে বিজেপি নেতারা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে তার কোন ভিত্তি নেই। এমনকি দুর্নীতি তো দূরঅস্ত, তিনি সরকারের টাকা দিয়ে চা অবধি খায় না। তার লেখা বই বিক্রি করে যা উপার্জন হয় তাতেই তার সংসার চলে। এছাড়াও তিনি বিরোধী দলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “নির্বাচনী লড়াইয়ে বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেবেন না তিনি।”
এছাড়া ওই দিন তিনি রাজ্যের সিপিএমকে একহাত নিয়েছেন। তিনি সিপিএম শিবিরকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “সিপিএম তো বিজেপিদের সর্দার। পরিকল্পনা করে একসাথে তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই আবার কিল মারার গোঁসাই।”