এবার বহিরাগত ইস্যু নিয়ে বিজেপির বিরোধিতা করার কৌশল গ্রহণ করল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু এদিন বিজেপির বিরোধিতা করে বলেন,”ত্রিপুরী কংগ্রেসের পর যা সুভাষ বোস এর সঙ্গে করা হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে করা হয়নি?” মমতা ব্যানার্জিকে সুভাষচন্দ্র বোস এর সঙ্গে তুলনা করে তিনি বললেন, মমতাকে সুভাসের মত লড়াই করতে হয়েছে, সুভাষ এর আজাদ হিন্দ ফৌজ এর মতই মমতা ব্যানার্জি তৈরি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর এবং পশ্চিম ভারত থেকে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে লোক পাঠানো হচ্ছে বাংলায়।
সুভাষচন্দ্র বোস ঠিক যেভাবে রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন, ঠিক সেইভাবেই রাজনৈতিক শিকার হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩৯ সালে সুভাষ বসু হেরে যাবার পরে উত্তর এবং পশ্চিম ভারতীয়রা চটে গিয়েছিলেন। ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো ৫০ বছর পরে। মমতা যেহেতু উপনিবেশিক লড়াই করেননি তাই তাকে চলে যেতে না হলেও, মমতাকে সুভাষ এর মতই একটি দল গঠন করতে হয়েছিল। সুভাষচন্দ্র বসু গঠন করেছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজ। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঠন করলেন তৃণমূল কংগ্রেস। এই তৃণমূল কংগ্রেসকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমানে উত্তর এবং পশ্চিম থেকে লোক পাঠানো হচ্ছে। বাইরের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মাথার উপরে বসানো হবে। তারা বলবেন, রবীন্দ্রনাথের জন্ম নাকি বোলপুরে। আদিবাসী মূর্তিতে মালা দিয়ে তারা বিরসা মুন্ডার গলায় মালা দেওয়ার কথা বলবেন। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে ভাট পাড়াতে উল্লাস করবেন।
ব্রাত্য বসু বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করে দিয়ে বললেন,”আপনারা বহিরাগত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করবেন, আর বাংলা রাজনীতি এভাবেই চলবে? আমাদের জাতির এতটা দুর্দশা কবে থেকে হল? যে সময়ে আপনাদের ঠাকুরদারা জোয়ার বাজরার জমিতে হিসেব করছিলেন সেই সময়, গলায় দড়ি দিচ্ছেন ক্ষুদিরাম। রাইটার্স দখল করতে গিয়ে আত্মঘাতী হচ্ছেন বিনয় বাদল দীনেশ। উত্তর প্রদেশ কিংবা গুজরাটের এমন একটা লোক দেখাতে পারেন যে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন? বিনায়ক দামোদর সাভারকার ৫ বার আন্দামানের সেলে মুচলেকা জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু, উল্লাসকর দত্ত, বারীন ঘোষ বছরের পর বছর ধরে জেলে পচেছেন। তাদের নামে কোনো সেলের নামকরণ হয় না, নামকরণ করা হয় বিনায়ক দামোদর সাভারকর এর নামে।”
মার্কিন মন্ত্রিসভাতে বাঙালির উপস্থিতি নিয়েও মোদি সরকার কে কটাক্ষ করেছেন ব্রাত্য। তার দাবি, ” আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ক্যাবিনেটে বাঙালি রাখছেন। গত ১০ বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন বিশ্ববাংলা। বাংলার মুখ দিয়ে বিশ্বকে দেখা। বাইডেনের ক্যাবিনেটে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। মার্কিন রাষ্ট্রপতি মনে করছেন গবেষক অরুণ মজুমদার যোগ্য মানুষ। আর, আমাদের ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারে ৭ বছর ধরে কোন বাঙালি মন্ত্রী নেই। গত ৭ বছর ধরে হাফপ্যান্ট পরা মন্ত্রীরা দেশ চালাচ্ছেন।”