বর্তমান সময়ে বিনিয়োগের নানা উপায় রয়েছে, তবে অল্প বিনিয়োগে বেশি রিটার্ন পেতে চাইলে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বা SIP অন্যতম। এই পরিকল্পনার মূল আকর্ষণ হলো বিনিয়োগের প্রক্রিয়া সহজ এবং দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এসআইপির মাধ্যমে রেগুলার ভিত্তিতে ছোট পরিমাণে টাকা বিনিয়োগ করে বড় রিটার্ন পাওয়া সম্ভব।অন্যদিকে, মিউচুয়াল ফান্ড বাজারের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে এসআইপি কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে, আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে এই ঝুঁকি কমে যায়। কেননা, রুপি কস্ট অ্যাভারেজের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার কিনে বেশি লাভের সুযোগ পায়। এতে কমপাউন্ডিংয়ের সুবিধাও থাকে, যা বিনিয়োগের মূলধনকে দ্রুত বাড়াতে সাহায্য করে।
বিনিয়োগের সময়কাল যত দীর্ঘ হয়, তত বেশি সুযোগ রিটার্নের। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিনিয়োগের জন্য নিত্য খরচ এবং জরুরী প্রয়োজনের পর যে টাকা অবশিষ্ট থাকে, সেই টাকাকেই এসআইপিতে বিনিয়োগ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ প্রতি মাসে ৪০০ টাকা বিনিয়োগ করে, তাহলে ২০ বছর পর সেই অল্প টাকা মোটা টাকায় পরিণত হতে পারে। এখন যদি এসআইপিতে ৪০০ টাকা করে বিনিয়োগ করা হয়, তাহলে ২০ বছরে মোট বিনিয়োগ দাঁড়াবে ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। যদি এই বিনিয়োগে গড় ১২ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যায়, তাহলে ২০ বছরের শেষে মোট রিটার্ন হবে প্রায় ৩০ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯২ টাকা। এটা সম্ভব হয় কমপাউন্ডিংয়ের কারণে, যা মূল বিনিয়োগের ওপর সুদের যোগফল তৈরি করে।
এসআইপিতে বিনিয়োগ করার সময়, ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ড একটি ভাল অপশন। দীর্ঘমেয়াদে এই ফান্ডে গড়ে ১২ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যায়। ভারতের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক এসবিআই এর অধীনে একাধিক মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে, যার মধ্যে ‘এসবিআই ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ড ডিরেক্ট গ্রোথ’ উল্লেখযোগ্য। এই ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা সঠিক পরিকল্পনা করে ভালো রিটার্ন পেতে পারেন। অল্প টাকা দিয়ে শুরু করে নিয়মিত বিনিয়োগ করলে একসময় বড় অঙ্কের টাকার মালিক হওয়া সম্ভব। সেই জন্য পরিকল্পনা এবং ধৈর্য্য দুইয়েরই প্রয়োজন। প্রতি মাসে ৪০০ টাকা করে বিনিয়োগ করলে, পরবর্তী ২০ বছরে মোট রিটার্নের পরিমাণ নিশ্চিতভাবে অনেক বড় হতে পারে। সুতরাং, যদি আপনি অল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে মোটা টাকার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে এসআইপি আপনার জন্য এক উৎকৃষ্ট বিকল্প।