সহজপাঠ লেখা হচ্ছে ইংরেজিতে, আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের দিনে এ এক লজ্জাজনক ঘটনা
শ্রেয়া চ্যাটার্জি: মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। বাংলা ভাষা আমাদের প্রতিটি শিরায় শিরায় প্রবাহিত, আমাদের কান্নার অশ্রুধারা বাংলা ভাষাতে, আমাদের আনন্দের ঝর্ণাধারাও বাংলা ভাষাতে। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ দিনটি একাধারে মর্মান্তিক, কিন্তু অন্যদিকে ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করছে এই দিনের মহিমা। ১৯৫২ সালের আজকের দিনে এই বাংলাভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন, তাই এই দিনটি একাধারে শহীদ দিবস। রাস্তায় নেমেছিলেন আবুল বরকত, আবুল জব্বার, আবুল সালাম সহ কয়েকজন ছাত্র যুবা।
অত্যাচারে নির্যাতনের আঘাত সহ্য করেও ছাত্ররা কিন্তু তাদের জায়গা থেকে একচুলও নড়েনি, তারা তীব্র প্রতিবাদ করেছে , শুধু তাই নয় তাদের সঙ্গ দিয়েছে সাধারন মানুষও, পরের দিন অর্থাৎ ২২ শে ফেব্রুয়ারি তারা পুনরায় রাস্তায় নামে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তাঁদের মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে বসানো হয়। বাংলাদেশি শহীদ ভাইদের মিনারের পাশে তাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয় এবং সেখানে বলা হয় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি’।
আরও পড়ুন : শিবরাত্রির দিন ঠিক কী কী করলে আপনি ভালো ফল পাবেন, তা দেখে নিন
কিন্তু আজ বাংলা ভাষায় যেন বড্ড বেশি অবহেলিত। পাশ্চাত্য শিক্ষার দাপটে এখন বাংলা কেউ পড়তে চায় না। কোন শিক্ষাই ছোট নয়, পাশ্চাত্য শিক্ষার ও আমাদের যেমন দরকার তেমন মাতৃভাষা কেউ কিন্তু আমরা ভুলতে পারিনা বা ভোলাটা অপরাধ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজ পাঠ এখন ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে। এর থেকে লজ্জার বিষয় বোধহয় আর কিছুতে হতে পারে না। সর্বোপরি বর্ণপরিচয় প্রণেতা বিদ্যাসাগর মহাশয় চেয়েছিলেন আমরা পড়াশোনা শিখিয়ে উন্নতির পথ দেখাবো, কিন্তু কোন অবনতি আমাদের গ্রাস করছে? ভাষা দিবসের দিনে আজকে এমন খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে, যা সত্যি লজ্জাজনক।