দক্ষিণেশ্বর কালী বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা রানী রাসমণির বাড়ির দুর্গাপুজোর কিছু অজানা ইতিহাস
রানী রাসমণির কথা আমরা সকলেই জানি। তিনি দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিণী কালীর প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু তার বাড়ির দুর্গাপূজা সম্পর্কে হয়তো অনেকের জানা নেই।
কলকাতার অনেক বনেদি বাড়িতেই দুর্গাপূজা হয়ে থাকে। কিন্তু রানী রাসমণির বাড়ির দুর্গাপুজো অন্যতম। রানী রাসমনির শ্বশুর মশাই ছিলেন শ্রীযুক্ত বাবু প্রীতরাম দাস। তিনি এই পুজোর প্রথম সূচনা করেছিলেন।
প্রীতরাম দাস এর মৃত্যুর পর তার পুত্র রাজচন্দ্র দাস সমস্ত জমিদারি ও এই পূজার দায়িত্ব নিয়ে নেন। কিন্তু রাজ চন্দ্র দাস এই পুজোর দায়িত্ব নিলেও তার অর্ধাঙ্গিনী রানী রাসমণির নামেই পুজোটি খ্যাত।
রানী রাসমণি ছিলেন চার কন্যা সন্তানের মাতা। বড়ো কন্যা ছিলেন পদ্মমণি। মেজো কন্যা ছিলেন কুমারী। সেজো ও ছোটো কন্যা ছিলেন করুণাময়ী ও জগদম্বা। বিয়ের দুবছর পরেই তার সেজো কন্যা করূনাময়ীর মৃত্যু হয়। এরপর করুণাময়ীর স্বামী মথুরামোহন বিশ্বাস রাসমনির ছোটো কন্যা জগদম্বাকে বিবাহ করেন। তাদের একটি পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। যার নাম তৈলক্ষ্যনাথ বিশ্বাস।
পরবর্তীকালে তৈলক্ষ্যনাথের চার পুত্র হয়। তারা হলেন বজ্র গোপাল, শ্রী গোপাল, নিত্যগোপাল ও মোহন গোপাল। বজ্র গোপালের আবার দুই কন্যা হয়। লাবণ্য লতা ও বিদ্যুৎলতা। বিজয় কৃষ্ণ হাজরার সাথে লাবণ্যলতার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বর্তমানে এই হাজরা পরিবার রানী রাসমণি যেখানে দুর্গাপূজা করতেন সেই স্থানে বসবাস করেন। এবং এই দুর্গাপুজো তাদের দ্বারা পরিচালিত হয়। যে স্থানে শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ নিজের পদধূলি দিয়েছিলেন সেই স্থানে রানী রাসমণি তার আদি দুর্গাপুজো করতেন।
তৈলক্ষ্যনাথের পুত্র নিত্যগোপালের আবার দুই সন্তান বর্তমান। তাদের নাম সুনীল কুমার বিশ্বাস ও সুশীল কুমার বিশ্বাস। সুনীল কুমার এর ছেলেরা বর্তমানে ১৮ নম্বর রোডে রানী রাসমণি ভবন এর দুর্গাপুজো পরিচালনা করেন। যা বর্তমানে বিশ্বাস বাড়ির পুজো নামে পরিচিত।
রানী রাসমনির বড়ো কন্যা পদ্মমনির বংশধরেরাও এই দুর্গাপুজো করে থাকেন। কুমারীর বংশধরেরা যেখানে থাকেন সেখানে তারা একটি দুর্গাপুজো করেন। এই পূজোটি চৌধুরী বাড়ির পুজো নামে পরিচিত।