বাজারে ক্রেতাদের দাঁড়াতে হচ্ছে ‘লক্ষণ রেখার’ মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি এই উদ্যোগ এবার পুনেতে
শ্রেয়া চ্যাটার্জি – পুনের একটি ছোট শহরে আপনি যদি বাজার করতে বের হন, খুব প্রয়োজনে, তাহলে দেখতে পাবেন সামনে দোকানিরা বসে আছে, আর একেকটা দূরত্ব মেপে মেপে ওই রাস্তার মধ্যে কেটে দেওয়া হয়েছে লক্ষণ রেখা, যেখানটায় আপনি দাঁড়াতে পারবেন। দাঁড়ালে আপনার নিজেকে সীতা বলে মনে হতে পারে কারণ করোনাভাইরাস কে আপনি যদি একবার রাবণ বলে ভেবে নেন, তাহলে কিন্তু একবারও ভুল করে ওই লক্ষণরেখা টা পার হবেন না হলে কি হবে বুঝতে পারছেন তো! না বিষয়টা মজার ছলে নিলেও পুনের এই ছোট্ট শহরের ছোট্ট উদ্যোগকে বাহবা জানাতে হয়। উদ্যোগটা হয়তো খুব সাধারণ। অনেকের মাথাতেই এমন আসতে পারে। কিন্তু করে কজন। কালকে দেশের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন পুরো দেশব্যাপী লকডাউন থাকবে। তাও মানুষের প্রয়োজনে টুকটাক বেরোতেই হচ্ছে, বাড়িতে সবজির অভাব থাকলে আপনাকে বাজারের থলি নিয়ে বাইরে বের হতেই হবে কিন্তু কোনো বিক্রেতার সামনে জমায়েত করবেন না। একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে নিয়ম মেনে বাজার করুন।
এখনও অনেক জায়গাতেই বাজারের সামনে লোকজনকে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে এবং সেখানে পুলিশরা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাদেরকে বিদে করছে। কিন্তু একটা সভ্য দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের কি মার খাওয়াটা খুব আনন্দের? কেন মানুষকে বারবার বোঝাতে হবে এটা কোন স্বাভাবিক একটা বন্ধের দিন নয় দিনটা কেটে যাওয়ার পরে আপনি হাওয়া খেতে বেরোলেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আপনার কাছে হাতজোড় করে আবেদন করছেন আপনি বাড়িতে থাকুন, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।
পুনের এই বাজারটি দেখে আমরা প্রত্যেকেই শিখতে পারি। অন্তত বাজার করতে গেলে রাস্তার উপর লক্ষণরেখা না থাক, আমরা মনে মনে একটা দূরত্ব ভেবে নিয়ে দাঁড়ালেও তো মন্দ হয় না? বয়স্ক মানুষরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের জন্য খুব বিপদ একথা জেনেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর রাস্তায় নেমে আমাদের প্রত্যেকের কাছে হাতজোড় করে একটাই অনুরোধ করছেন আমরা যেন বাড়িতে থাকি। প্রধানমন্ত্রী ও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বিষয়টি নিয়ে। তাদের কথাটা একটু শুনতে আমাদের ক্ষতি কি। ইতালির এমন দিন এসেছিল। ইতালি কেও জানানো হয়েছিল, লকডাউনের কথা। কিন্তু ইতালির মানুষ শোনেননি। সেই না শোনার ফল ভুগতে হচ্ছে ইতালির মানুষকে।