এবার কলকাতা হাইকোর্ট আপার প্রাইমারি তথা উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিয়ে দিল। উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছিল পরীক্ষার্থীরা। তারপর পরীক্ষার্থীদের একাংশ সমস্যা নিরাময়ের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়। এবার শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের কথা শুনল আদালত। প্রায় আড়াই হাজার পরীক্ষার্থীর দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে আজ অর্থাৎ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে চূড়ান্ত রায় দিয়েছে।
আজকের চূড়ান্ত রায় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। আবার সব নতুন করে শুরু করতে হবে। আদালতের এই রায়ে খুশি পরীক্ষার্থীদের একাংশ। মামলা করা পরীক্ষার্থীদের তরফে আইনজীবী জানিয়েছে, তাদের দাবি ছিল পরীক্ষার্থীদের ডকুমেন্ট চেক করা স্তর থেকে সমস্ত প্রক্রিয়া নতুন করে করতে হবে। কারণ নিয়োগের সময় চূড়ান্ত দুর্নীতি হয়েছে। আদালতে পরীক্ষার্থীদের এই আবেদন ছিল। ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন শূন্যপদের পরিমাণ ছিল ১৪৩৩৯ টি। কিন্তু তারপর থেকে আজ অব্দি চার বছর হয়ে গেলেও তা এখনো সম্পন্ন হয়নি।
আজ অর্থাৎ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত প্রক্রিয়া আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। পুরনো যা নিয়োগ হয়েছে তা সব বাতিল। যেই প্যানেল নিয়োগ কাজে নিযুক্ত ছিল তাদেরও বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে নতুন করে সব প্রক্রিয়া আবার চালু হবে। তারপর ৫ এপ্রিলের মধ্যে ডকুমেন্ট চেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তারপর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত নিযুক্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সেইসাথে এদিন তিনি জানান, একমাত্র যারা যোগ্য তাদের সিলেকশন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যাদের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নির্বাচিত হয়েছে তারা বাদ পড়বে।
সামনে একুশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের কাছে হাইকোর্টের এই রায় খুব একটা স্বস্তির হবে না। এমনিতেই অনেকেই এখন মনে করে সরকারি চাকরি পেতে গেলে টাকা দিতেই হয় বা দুর্নীতি করে সরকারি চাকরি পায় সবাই। টাকা নিয়ে চাকরি দেয়া হয় নির্দিষ্ট যোগ্যতা ছাড়াই। এরপর আদালতের রায়ের পর সেই ধারণা আরো পাকাপোক্ত হলো বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের এরকম গাফিলতির ছবি সাধারণ মানুষ জানতে পারলে তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে তা বলা বাহুল্য।