আম্ফানের সময়কাল থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। টাকা না পাওয়া নিয়ে বারংবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তার বক্তব্যের একটাই কথা, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রাজ্যকে কোন টাকা দেওয়া হয় না। এবারে ঘূর্ণিঝড় যশের আগেও ঠিক একই রকমভাবে শুরু হয়ে গেল কেন্দ্র এবং রাজ্যের সংঘাত।
বাংলা আবারো কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠকের পর জানিয়েছেন এই যশ ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বাংলাকে ৪০০ কোটি টাকা এবং ওড়িশাকে ৬০০ কোটি টাকা সাহায্য দেওয়া হবে। আর এই সাহায্যের পরিমাণ নিয়েই এবারে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, বাংলা বড়ো রাজ্য সত্ত্বেও কেন উড়িষ্যাকে বেশি টাকা দেওয়া হচ্ছে আর বাংলাকে কম? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জানানো হয়েছে যশের প্রাক্কালে অগ্রিম বরাদ্দ হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, উড়িষ্যার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৬০০ কোটি টাকা এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।
এই কথাটা শুনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ জানালেন, “পশ্চিমবঙ্গ আকারে অনেকটা বড় রাজ্য হওয়া সত্বেও এবং এই রাজ্যে জনসংখ্যা অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও কেন পশ্চিমবাংলাকে এরকম ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে?” যদিও এই প্রশ্নের পাল্টা অমিত শাহ উত্তর দিয়েছেন, “এর পিছনে সায়েন্স আছে।” সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমিত শাহের এই সাইন্সের পাল্টা বললেন, “আমি একটু একটু পলিটিক্যাল সায়েন্সটা বুঝি কিন্তু সাইন্সটা ঠিক বুঝিনা। এই টাকাটা কেন্দ্র দিচ্ছে না। এটা আমাদেরই টাকা, অগ্রিম দেওয়া হচ্ছে। আম্ফানের ক্ষেত্রে ১০০০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল কিন্তু আদতে সেরকম কিছু হয়নি।”
মমতার অভিযোগ, “প্রত্যেকবার ঝড় হলে কেন্দ্রীয় টিম এসে ঘুরে যায় কিন্তু কোনদিন কোন লাভ হয় না।” এছাড়াও নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা প্রতিশ্রুতির কথা বাস্তবায়নের আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের খুব সামনেই বর্তমানে অবস্থান করছে যশ ঘূর্ণিঝড়। যদিও, আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে হবে না, বরং উড়িষ্যার বালেশ্বরে এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হবে।