কৌশিক পোল্ল্যে: ফেসবুকই বদলে দিল তার জীবন। অসাধারন গানের গলা নিয়ে জন্মেছে হুগলির ইটাচুনা গ্রামের আদিবাসী কিশোরী চাঁদমণি হেমব্রম, সে এবার পাড়ি দেবে বলিউডে। নেহা কক্করের ‘ও হামসফর’ গানটি গেয়ে রাতারাতি ভাইরাল স্টারে পরিনত হন চাঁদমনি। এক স্কুলশিক্ষকের উদ্যোগে সেই গান সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার পরই গোটা দেশে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে চাঁদমণি। বলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকেও অফার আসতে শুরু করেছে। সেই গান গাইতে সাঁওতালি এই মেয়ে পাড়ি দেবে মুম্বাই।
দারিদ্র্যতা ও অভাব ছিল তাদের সংসারের নিত্য সঙ্গী। তিনি বোনের মধ্যে চাঁদমণিই বড়। দশ বছর আগে তার বাবার মৃত্যুতে সংসারের অবস্থা একেবারে ভেঙে পড়ে। সংসারের হাল ধরতে মায়ের সঙ্গে মাঠে গিয়ে ধানচাষের কাজে হাত লাগাতো মেয়েটি। পরিবারের সকলেই দুবেলা দুমুঠো খাবারও পেতেন না ঠিকমতো। অভাবের মধ্য দিয়েই চলছিল মেয়েটির পড়াশোনা।
ইটাচুনা গ্রাম পঞ্চায়েতের মুল্টি গ্রামের বাসিন্দা চাঁদমনি হেমব্রম সারদেশ্বরী কন্যা বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেনীর ছাত্রী। ছোট থেকেই গান ওর মনকে টানে, মিউজিক স্টিটেমে চলা গান শুনে ও সারাক্ষন গুনগুন করত কিন্তু পয়সার অভাবে গান শেখার সৌভাগ্য হয়নি চাঁদমণির, তা বলে প্রতিভা কি কোনোদিন থেমে থাকতে পারে। আদিবাসী মেয়েটির উপর নজর পড়ল স্কুলের শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবরের। চাঁদমণির রেকর্ড করা গান নিজের ফেসবুকে শেয়ার করার পরই, বলিউড থেকে চাঁদমণির জন্য অফার আসতে শুরু করে।
পাঞ্জাবের বিখ্যাত শিল্পী আয়শান আদ্রির সংগীত পরিচালনায় মুক্তি পেতে চলেছে চাঁদমণির প্রথম গান ‘জুদাইয়া বে’। গানটি কোনো বড় মিউজিক কোম্পানি ও টিভি চ্যানেল থেকে প্রোমোট করা হবে। এর পাশাপাশি ইন্ডিয়ান আইডল এর ১২ তম সিজনটিতে চাঁদমণির অংশগ্রহনের জন্য আমন্ত্রন এসেছে বলে জানিয়েছেন চিরঞ্জিতবাবু। সবমিলিয়ে আদিবাসী মেয়েটির জীবন রূপকথার গল্পের মতোই বদলে গেল বটে।