এতোদিন পর্যন্ত সিপিএমের পলিটব্যুরো মানেই দেখা যেত পাকা চুলের সমাহার। কিন্তু এবারে সেই ধারণা ভাঙতে চলেছে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া ( মার্কসবাদী )। বর্তমান প্রজন্মের মন আবারো ফিরে পেতে চাইছে বামপন্থী দল সিপিআইএম। তাই এবারে যারা বৃদ্ধ রয়েছেন তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে নতুন করে পলিটব্যুরো তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। বৈঠকে জানা যাচ্ছে যারা বর্তমানে ৭৫ এর বেশি বয়সী রয়েছেন তাদেরকে কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলা হবে। যদি এরকম সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় তাহলে বাদ পড়তে চলেছেন বিমান বসু এবং হান্নান মোল্লা। তার সাথে আরও অনেকে বাদ পড়তে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রবিবার একটি তিনদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষ হয়, অনুষ্ঠিত করা হয়েছিল মূলত ভার্চুয়ালি। করোনা আবহে ৭৫ ঊর্ধদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছিল। সেখান থেকেই নবীনদের সুযোগ করে দেওয়া নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআইএম। আগামী বছর কেরলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের উপর সীলমোহর দিতে পারে সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। যদি এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় তাহলে কিন্তু পলিটব্যুরো থেকে বাদ পড়ে যাবেন বিমান বসুর মত হেভিওয়েট নেতারা।
অবশ্য দলে তরুণদের সুযোগ করে দেওয়া নিয়ে এই প্রথম যে কথা বলা হচ্ছে সেরকম কিন্তু নয়। সিপিএমের পলিটব্যুরো মানেই বৃদ্ধতন্ত্র, এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে দিতে চাইছে সিপিআইএম। এই দাবি একসময় খোদ পেশ করেছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি দাবি জানিয়েছিলেন যারা ৭৫ বছরের বেশি বয়সী এবং যাদের শরীর খুব একটা ভালো নেই তাদের স্বেচ্ছায় কমিটি ত্যাগ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু সেই সময় তেমনভাবে এই বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
বলতে গেলে ২২ তম পার্টি কংগ্রেসের বৈঠকে এই বিষয়টি অনুমোদন পর্যন্ত পায়নি। তবে বর্তমানে সিপিআইএমের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। একমাত্র যেখানে রয়েছে সিপিআইএম সেটা হল কেরল। এই রাজ্যটি ছাড়া বাকি কোথাও ক্ষমতায় নেই সিপিআইএম। এমনকি ৩৪ বছর শাসন করা পশ্চিমবঙ্গে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে একেবারে শূন্য হয়ে গিয়েছে সিপিআইএম। ত্রিপুরাতেও অবস্থা একেবারে তথৈবচ। তাই, আবারও নতুন করে সময় উপযোগী হয়ে ওঠার তাগিদ নিয়ে নেমে পড়েছে সিপিআইএম। এবারে তাদের ভাবনা দলে নতুন মুখ যোগ করা। কিন্তু তাতে কি লাভ হবে? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।