এনআরসি এবং সিএএ ছাড়াও আরও বিভিন্ন ইস্যুগুলিকে কেন্দ্র করে গত ৮ জানুয়ারী ২৪ ঘন্টা সারা দেশে বনধ ডাকা হয় বিভিন্ন বাম সংগঠনগুলির তরফ থেকে। এদিন সকাল থেকে ধর্মঘটীরা পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক তারা মিছিল শুরু করেন।কংগ্রেস এবং বাম সমর্থকরা সুজাপুর স্ট্যান্ডের কাছে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বেঞ্চ পেতে বসে পড়েন।এরপর বেলা বাড়তে বাড়তে সেখানে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।এছাড়াও পুলিশ মজুত ছিল।এহেন অবস্থায় জাতীয় সড়ক আস্তে আস্তে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
ধর্মঘটের দিন সারা রাজ্যে খুব বেশি অশান্তি লক্ষ্য করা না গেলেও মালদার সুজাপুরে এদিন রীতিমতো বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি,ভাঙচুর করা হয় হোটেল।এছাড়াও জাতীয় সড়ক অবরোধ চলে লাগাতার বাস ও প্রাইভেট গাড়ি ভাঙচুর। এই পরিস্থিতি দেখে কালিয়াচক থানা জ্বালায়ে দেওয়ার স্মৃতি ভেসে ওঠে।তবে এদিনের ঘটনায় পুলিশ এবং বিভিন্ন দলের নেতারা দাবি করেছেন, “এই ঘটনায় কোনো দলের সমর্থক বা পুলিশ যুক্ত ছিলেন না।হামলার সুযোগ নিয়ে কয়েক দল দুস্কৃতি এহেন ভাঙচুর চালিয়েছে।” তবে এদিন হামলার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে ঈদগাহ মাঠে থাকা ট্রাক ও ছোট গাড়িগুলি ভাঙচুর চালাচ্ছে পুলিশ কর্মীরা।
আরও পড়ুন : ‘রাজ্যে নোংরা রাজনীতিতে নেমেছে বাম ও কংগ্রেস’, দিল্লিতে বিরোধী বৈঠকে থাকছেন না মমতা
এই হামলার পিছনে কারা রয়েছেন তার তদন্তের জন্য দায়িত্বভার দেওয়া হল CID-কে। বৃহস্পতিবার এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে CID এর হাতে।শিলিগুড়ি থেকে সুজাপুর এদিনই যাচ্ছে CID এর বিশেষ দল।সুজাপুরে হামলা এবং গাড়িগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় রাতভর তল্লাশি চালায় পুলিশ এবং১২ জনকে আটক করা হয়েছে।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকারের গাড়ি সহ আরও ৭টি গাড়ি এবং স্থানীয় ২টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।এরপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চালায় কাঁদানে গ্যাস ও লাঠি।
এদিন ঝামেলার খবর মিললেও দীর্ঘক্ষণ সুজাপুরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। দুপুর আড়াইটে নাগাদ, এলাকায় রীতিমত যুদ্ধ শেষের চেহারা। চৌরাস্তার মোড়ে জাতীয় সড়ক এবং দু’পাশে গ্রামের ভেতর নেমে যাওয়া দু’টি রাস্তা দুটো দেখে মনে হচ্ছিল, আবিরের বদলে কাচের বোতল ছুড়ে হিংসার হোলি খেলা হয়েছে। ঈদগাহ এর মাঠ থেকে বের হচ্ছিল কটু গন্ধ।চারিদিকে দগ্ধ পুলিশের গাড়ি,আগুন। এছাড়াও ছিল পুলিশ। কয়েকজন সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, ‘শান্তিপূর্ণ সুজাপুরে এ দিন পুলিশই অশান্তি করেছে। আগুন লাগানো এবং ভাঙচুর সব পুলিশ করেছে।’
আরও পড়ুন : নমোর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর পদে প্রথম কলকাতা সফর, সরগরম শহর
সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “সুজাপুরে তৃণমূল সরকারের পুলিশেরা উত্তরপ্রদেশের যোগীর রাজ্যের পুলিশের মতো এদিন গাড়ি ভাঙচুর করেছে, দোকান ভাঙচুর করেছে। গঙ্গাসাগরে হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উস্কানি দিয়েছেন। এরপর সুজাপুরের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ভিডিয়োতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে পুলিশ গাড়ি ভাঙছে।”