নিউজপলিটিক্সরাজ্য

তৃণমূলের প্রতি সুর নরম কংগ্রেসের, জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা

বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর বহু কংগ্রেস নেতা বামফ্রন্ট ছেড়ে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা বৃদ্ধি করার কথাই বলছেন

Advertisement

এইবারের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বাম কংগ্রেস জোট এর। এবারের নির্বাচনে একটিও আসন জয়লাভ করতে সক্ষম হয়নি বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস, বরং একটি আসনে জয়লাভ করে সংযুক্ত মোর্চার খাতা খুলেছে আইএসএফ। তাই এবারে বামফ্রন্টের প্রতি কিছুটা বিরাগভাজন হয়েছে জোট সঙ্গী কংগ্রেস। কংগ্রেসের এইরকম মনোভাব এর ফলে চাপে পড়েছে বামফ্রন্ট। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় এরকম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি আলিমুদ্দিন। সিপিএম কার্যত উভয় সঙ্কটে, এই কারণে জোটের ভবিষ্যত্ কার্যত অনিশ্চিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে রুখতে দলের অবস্থান এ কোন দূর্বলতা রাখতে চাইছে না আলিমুদ্দিন। পাশাপাশি, বিজেপিকে রুখতে গিয়ে যাতে তৃণমূলের প্রতি ভালো বার্তা না পৌঁছে যায় সেই দিকেও লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে বামফ্রন্টকে। তার মধ্যে আবার, কিছুদিন আগে থেকেই তৃণমূলের প্রতি সুর নরম করতে শুরু করেছে কংগ্রেসের একাংশ। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রশান্ত কিশোর।

অন্যদিকে আবার জাতীয় ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তর জোট গড়ে তোলার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি বিরোধী সমস্ত দলকে একসাথে করে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কে পরাস্ত করতে চাইছেন। এসবের মধ্যেই আবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কয়েকজন তৃণমূলের দিকে হাত বাড়িয়েছেন।কংগ্রেসের একজন নেতা ইতিমধ্যেই মন্তব্য করেছেন, তারা নাকি মমতার পক্ষেই রয়েছেন। জোট সঙ্গীদের এরকম মনোভাব কার্যত বিরম্বনায় ফেলেছে বামফ্রন্টকে।

শুধু তাই নয়, বিজেপির বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস যে বামফ্রন্টের থেকে অনেকটা বেশি এগিয়ে রয়েছে বর্তমানে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। জাতীয় ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব দিনে দিনে বাড়তে শুরু করেছে। একটি অপেক্ষাকৃত ছোট এবং আঞ্চলিক বলা চলে এ রকম একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দোপাধ্যায় এর জনপ্রিয়তা সত্যি কিন্তু চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে, ২০০৬ এর পর থেকে কোনো নির্বাচনেই বামফ্রন্ট নিজেকে প্রমাণ করতে পারেনি তেমনভাবে, সে বিজেপির বিরোধিতাই হোক আর তৃণমূল বিরোধীতাই হোক। তাই, বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট যে অনেকটা ব্রাত্য, তাদের নীতিতে কিছুটা গলদ যে আছে, সেটা অস্বীকার করতে পারছেন না আলিমুদ্দিনের কেউই। এই পরিস্থিতিতেই বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, দেশে বিজেপিকে রক্ষার লড়াইয়ে কোন শিথিলতা চাইছি না। রাজ্য়ে তৃণমূল বিরোধীতা থেমে থাকতে পারে না আমরা জোট আগে বাড়িয়ে ভাঙতে যাব না। কিন্তু যদি, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলেও লড়াই করতে বামফ্রন্ট সব সময় প্রস্তুত।

Related Articles

Back to top button