পদ্মফুল শিবিরে এখন আর সদস্য নন বাবুল সুপ্রিয়। তবে বাবুল আর দিলীপ ঘোষের দ্বৈরথের অন্ত নেই। মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন সদস্যকে খোঁচা মারলেন। মঙ্গলবার সকালে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্যে বললেন, ‘সিপিআইএম সর্বহারা নয়, সর্বহারা কে জানেন? বাবুল সুপ্রিয়’। এদিন বাবুল-দিলীপ দ্বৈরথের অধ্যায়ে এক নতুন পর্বের সূচনা হল।
কয়েকদিন ধরে ত্রিপুরায় পুরসভা নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রবিবার সায়নী ঘোষের গ্রেপ্তারের পর এরাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসকে জোরদার আন্দোলন করতে দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পথে নামতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতাকে বাবুল সুপ্রিয়কে। মঙ্গলবার কলকাতা পোর্ট ডিসি অফিসের সামনে চায়ে পে চর্চা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। এদিন মঞ্চে মাইক হাতে ঘাসফুলের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন, তবে পুরোটাই কৌতুক রসের মাধ্যমে। তৃণমূলের ত্রিপুরা-অভিযান নিয়েও একের পর এক বাণ ছুঁড়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই এবার বাবুল সুপ্রিয়র নাম নিলেন দীলিপ বাবু।
এদিন দিলীপ আরো বলেন, ” বাংলায় বেইমানের সংখ্যা বাড়ছে। অটল বিহারী বাজপেয়ীজি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ভরসা করেছিলেন, তিনিও বেইমানি করেছেন। নরেন্দ্র মোদী বাবুল সুপ্রিয়র ওপর ভরসা করেছিলেন, তিনিও বেইমানিই করলেন। আজকে কোথায় দাঁড়িয়ে বাবুল সুপ্রিয়? ওঁর গাওয়া গান আজকে ওঁকেই শুনতে হচ্ছে ত্রিপুরাতে!” মঞ্চে যখন দিলীপ একথা বলছেন, বাকি সদস্যরা তাঁর মন্তব্য শুনে হাততালি দিলেন।
এদিন দিলীপের আরো সংযোজন, “লোকেই বলছেন, এই বাবুল আর নয়! আমি এক বন্ধুকে বলছিলাম, আপনারা ভাষণ দেন সিপিএম সর্বহারা, সর্বহারা! দেখেছেন কে সর্বহারা? বাবুল সু্প্রিয় সর্বহারা। আমরা ওঁকে মাথায় করে রেখেছিলাম। যা চেয়েছিলেন, তাই দিয়েছিলাম। কিন্তু কী করলেন…” দিলীপ বলেন, “এখন বাবুল তৃণমূলে গিয়েছেন, চোরেদের দলে গিয়েছেন।”
বাবুল-দিলীপ টানাপোড়েন রাজনৈতিক মহলে আজকের নতুন বিষয় নয়। এর আগেও একাধিকবার বাবুলকে নানান কারণে কটাক্ষ করেছেন দিলীপ। আসানসোলের সাংসদ যখন বাবুল বিজেপিতে ছিলেন, তখন থেকেই তাঁদের শীতল লড়াই ছিল। কিন্তু বর্তমানে দিলীপের কোনও কথাতেই এখন আর বিশেষ কান দিতে চান না বাবুল। দিলীপ প্রসঙ্গে এদিন বাবুল স্পষ্ট জানালেন, “ওঁ সকালে যেটা বলেন, সেটা সারাদিন মানুষ এনজয় করেন। ওঁকে ওঁর মত বলতে দিন। ওঁ কথায় কোনও কিছু এসে যায় না।” উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসেই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন বাবুল সুুপ্রিয়। তার আগেই অবশ্য বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন তিনি। দপ্রায় ৭ বছর বিজেপির সাথে যুক্ত থাকলেও এই সংগঠনের সঙ্গে গাঁটছড়া তেমন মজবুত হয়নি বাবুলের।