করোনা রিপোর্টের অভাবে মর্গে আটকে মৃতদেহ, চূড়ান্ত অব্যবস্থা কলকাতার এই হাসপাতালে
বাঘাযতীন হাসপাতল মর্গে ৩ দিন মৃতদেহ আটকে ছিল
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। নয়া মিউট্যান্ট স্ট্রেন আগের তুলনায় অনেক বেশি ভয়াবহ। এতে একদিকে যেমন সংক্রমণ বেড়ে গেছে ঠিক তেমনি অন্যদিকে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুহার। গোটাদেশে শুধুমাত্র শেষ ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রমণ হয়েছে ৪ লাখের কাছাকাছি। বেহাল অবস্থা ভোটমুখী বাংলার। সংক্রমনের গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় বাংলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ২৮১ জন। প্রায় প্রতিদিন যেমন হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে উদ্বেগে রয়েছে রাজ্যবাসী তথা প্রশাসন। এক ধাক্কায় করোনা অ্যাক্টিভ কেস বেড়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেহাল দশা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বাঘাযতীন হাসপাতাল। আসলে গত ১৯ এপ্রিল প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাঘাযতীন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিনতি ঘোষ। শ্বাসকষ্ট থাকলেও তার শরীরে জ্বর ছিল না। তাকে বাঘাযতীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসা শুরু হয়। তারপর তার করোনা রিপোর্ট করা হয় ২১ এপ্রিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেদিন রাতেই তার মৃত্যু হয়। তারপর করোনা রিপোর্ট না পাওয়ার জন্য তার দেহ হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকে তিনদিন। তারপর অবশেষে ২৪ এপ্রিল তিনদিন পর ঐ বৃদ্ধার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ততক্ষণে হাসপাতাল মর্গে তার দেহে পচন ধরেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গলা পচা দেহ ফিরিয়ে দিলে পরিবারের লোকেরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে।
পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, “এতদিন কেন হাসপাতাল মর্গে ঐ বৃদ্ধার দেহ ফেলে রাখা হলো? চূড়ান্ত অব্যবস্থা অভিযোগ জানিয়েছে তারা।” এই পরিস্থিতিতে বাঘাযতীন হাসপাতালে এক শীর্ষকর্তা তাদের গাফিলতি স্বীকার করে নিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, “করোনার কারণে রীতিমতো স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভিত নড়ে গেছে। এখন করোনা রিপোর্ট করতে দিলে সেই রিপোর্টে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে হয়ে আসছে। তার জন্য সময় লেগে যাচ্ছে।”