DA Hike: ১ জানুয়ারি থেকে DA বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই, দাবি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের নেতার
এইবারের বাজেটের দিকেই সবার নজর রয়েছে
২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নতুন বছরের শুরুতেই ডিএ বৃদ্ধির সম্ভাবনা ক্ষীণ। কর্মচারীদের একাংশ আশা করেছিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার অ্যালেন পার্ক থেকে এই বিষয়ে ঘোষণা করবেন। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
তবে কর্মচারীদের একাংশ এখনো আশাবাদী যে পরে ঘোষণা হলেও ডিএ বৃদ্ধির সম্ভাবনা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। অতীতে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে, যেখানে সরকার দেরিতে ঘোষণা করলেও পূর্ববর্তী তারিখ থেকে বর্ধিত হারে মহার্ঘ ভাতা কার্যকর করেছে। এমনকি বকেয়া অর্থও কর্মচারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এরকম সিদ্ধান্ত প্রায়ই নেয়। যেমন, ২০২৪ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা তিন শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়, যা কার্যকর ধরা হয় ওই বছরের জুলাই থেকে। ফলে তাদের ডিএ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ শতাংশ। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা বকেয়া অর্থও পেয়ে যান।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ১৪ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন। এই হারে তারা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় ৩৯ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছেন। কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ২০২৪ সালে মোট সাত শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি হয়েছে, যেখানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বেড়েছে মাত্র আট শতাংশ। এই পার্থক্য রাজ্যের কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
২০২৫ সালের রাজ্য বাজেটকে কেন্দ্র করে কর্মচারীদের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। গত দুই বছরের বাজেটেও ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছিল, তাই এবারও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই। তবে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি, মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের বেতন কাঠামোতে ন্যায্যতা আনা হোক। তারা মনে করেন, বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির বাজারে ১৪ শতাংশ হারে ডিএ কার্যত অপ্রতুল। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় তারা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বাজেট ঘোষণার দিকে তাকিয়ে আছেন সবাই।
ডিএ বৃদ্ধির দাবি শুধু অর্থনৈতিক স্বস্তির জন্যই নয়, এটি কর্মচারীদের আত্মবিশ্বাস এবং মনোবল বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষত যারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সেবায় নিয়োজিত, তাদের জন্য এটি একটি ন্যায্য দাবি বলে মনে করেন সংগঠনের নেতারা।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো না হলেও বাজেট ঘোষণার আগে বিভিন্ন মহলে আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে। কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের দাবি সম্পর্কে অবগত এবং পরিস্থিতি বিচার করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। অন্যদিকে, কিছু কর্মচারী শঙ্কিত যে এই ঘোষণা না হলে তাদের আর্থিক অবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
২০২৫ সালের বাজেট নিয়ে তাই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আশা-নিরাশার দোলাচল চলছে। তারা চেয়ে আছেন সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে, যা তাদের ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনার ওপর বড় প্রভাব ফেলবে। বাজেট ঘোষণার পরই পরিষ্কার হবে, রাজ্য সরকার তাদের প্রত্যাশা কতটা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।