শ্রেয়া চ্যাটার্জি – এখনো আমাদের সমাজে পুত্র সন্তানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পুত্র সন্তান না হলে সেই সাত সন্তানের মাকে দোষারোপ করা হয়। কন্যা ভ্রুণ হত্যা করা হয়। কিন্তু আমরা কেউ জানিনা সেই কন্যা বড় হয়ে কোন পুত্র সম কোন কাজ করবে কিনা। সমাজের একটা অংশ এখনো কুসংস্কারে নিমগ্ন। সমাজের একাংশ মানতেই চান না, সন্তান পুত্র হবে না কন্যা হবে তা স্থির হয় সেই সন্তানের পিতার উপর। মহিলারা আজও অনেকাংশ প্রচারিত। কিন্তু কথাতেই তো আছে ‘নারীরা অর্ধেক আকাশ’।
তবে কেন সে অর্ধেক আকাশ থেকেও নারীকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? এর উত্তর আছে, নারীদের কাছেই। নারীরা নিজেদেরকেই যদি ঘরের কোণে আটকে রাখে তাহলে তো সমাজের আরেকদল নিজের জায়গা করে নেবেই। তাই এগিয়ে আসতে হবে নিজেকেই। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ঘুরপাক খাচ্ছে যা লক্ষ লক্ষ মানুষের নজর কেড়েছে, মনের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছে। ছবিটি একটি গর্বিত পিতা এবং সফল কন্যার। মেয়ের কর্মে উন্নতি হয়েছে। সে মনিপুরের ডিএসপি থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট হয়েছেন। পুলিশের ইউনিফর্মের কাঁধে রাখা স্টার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছেন বৃদ্ধ পিতা। মেয়ে কাঁধ সোজা করে বাবার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আর হাসছে। বাবাও হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তার মেয়ের একটু একটু করে পদোন্নতি দেখে খুশিতে আপ্লুত হচ্ছেন।
তিনি হলেন রত্তানা নাগাসেপাম।রত্তানা প্রমাণ করে দিয়েছে, কন্যা সন্তান হয়েও তিনি পুত্রের থেকে কোন কম কাজ করেননি। যে সমাজ আজও পুত্র সন্তান কামনায় কন্যা ভ্রুণ হত্যা করে তাদের সামনে তিনি এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। পুত্রের মতো কন্যা সন্তানকেও পড়াশোনা করে তৈরি করতে পারলে তার চাকরির পদোন্নতিতেও যে কতটা আনন্দ হতে পারে তা এই ছবি প্রমান করে। রত্না শুধু তার বাবার মন জয় করে নি জয় করে নিয়েছেন গোটা দেশবাসীর মন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার সাথে সাথেই মানুষজন সাড়া দিতে শুরু করে। দেবে নাই বা কেন! এমন ছবি তো চিরকাল মনের মনিকোঠায় ফ্রেমবন্দি করে রাখার মতন ছবি। এ নারী শক্তির জয়। মেয়েরা চাইলে সব করতে পারে। শুধু মনের জোর প্রয়োজন। আর পাশে যদি থাকেন এমন বাবা, মা। তাহলে তো এগিয়ে যাওয়ার পথ আরো সুগম হয়। বাবা, মেয়ের এমন ছবি চিরকালের হয়ে থাকবে।